স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংক ১ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংক প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2022, 02:19 PM
Updated : 19 May 2022, 02:19 PM

বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কোভিড নিয়ে কিছুটা আলোচনা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে রিসেন্টলি বাংলাদেশের বিষয়ে একটি রিভিউ হয়েছে। এখানে খুবই ভালো রেসপন্স এবং দে আর ভেরি হ্যাপি।

“এ জন্য তারা বাংলাদেশকে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার, এটা ৯৪৫ মিলিয়ন ডলার তারা অ্যালোকেট করেছে। তারা বাংলাদেশের কোভিড কার্যক্রমের জন্য খুবই সন্তুষ্ট। বিশেষ করে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই টাকা বিশ্ব ব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে। আগামী অর্থবছরের কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মহামারীর মধ্যে ‘টিকা এবং অন্যান্য সহায়তা’ বাবদ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকেই প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।

“এর বাহিরেও প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকার টিকা কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউট করেছি। এত বড় একটি জনগোষ্ঠীকে যে ভ্যাক্সিনেটেড করা গেছে, এটা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড খুব অ্যাপ্রিশিয়েটেড হয়েছে।”

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিশ্ব ব্যাংক তা সারা পৃথিবীতে ‘প্রচার করতে চায়’।

“যেহেতু আমাদের প্রাইমারি হেলথ সিস্টেম খুব স্ট্রং, ইপিআই কার্যক্রম… এটা আপনারা জানেন। জাপানেও একটি বড় পত্রিকায় এটা নিয়ে বড় করে রিপোর্ট হয়েছে। তারাও রেকোমেন্ড করেছে, বাংলাদেশের মডেলটা নিয়ে অন্য জায়গাগুলোতে ব্যবহার করা যায়।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মহামারী শুরুর পর বাংলাদেশ পরিস্থিতি কীভাবে কতটা সামলাতে পারবে, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে এক ধরনের ‘সংশয়’ ছিল।

“এজন্য বাংলাদেশ সরকার যখন অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জন্য পে করে, তখন অনেকেই এটা নেগেটিভভাবে নিয়েছে। তখনও কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যাস্ট্রেজেনেকাকে অনুমোদন দেয়নি। তখন বাংলাদেশ কিন্তু চুক্তি করে ফেলেছে। 

“এবং কোভেক্স থেকে আমরা ব্যাপক সহায়তা পেয়েছি। এটা মোর দেন ২০ হাজার কোটি টাকা। এগুলো কিন্তু আমরা বিনা পয়সায় (দেশের মানুষকে) দিয়েছি।”

সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। পরে সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতির খসড়া অনুমোদন

এদিন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি ২০২২ এর খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে।

মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি কীভাবে সহজ করা যায়, মাঠ পর্যায়ে কীভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়, মানসিক সমস্যায় যারা ভুগছেন, কীভাবে তাদের সমাজ জীবনের অংশ করা যায়, সেসব বিষয় এই নীতিমালায় গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ এ নীতিমালা বৈঠকে উপস্থাপন করেছিল। মন্ত্রিসভা তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

“এটা বিশ্বব্যাপী একটা ট্রেন্ড যে মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া স্বাস্থ্য সেবা অসম্পূর্ণ। সুতরাং যখনই স্বাস্থ্যের কথা আসবে, তখনই মানসিক স্বাস্থ্যের কথা আসবে। তারই প্রেক্ষিতে সরকার এটা অনুমোদন দিয়েছে।”

স্বাস্থ্য বিভাগের জরিপের তথ্য তুলে ধরে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.০৭ শতাংশ এবং শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রায় ১২.০৬ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে অসুস্থ। এই সংখ্যাকে অ্যাড্রেস করা দরকার।”

বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দল গঠন করে প্রায় পাঁচ বছর কাজ করার পর এ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।