নাপা সিরাপের একটি ব্যাচ পরীক্ষার নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্যারাসিটামল সিরাপ- নাপা সেবনে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ আসার পর সারাদেশের পাইকারি ও খুচরা দোকান পরিদর্শন করে একটি ব্যাচের ওষুধ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 March 2022, 08:30 AM
Updated : 13 March 2022, 08:30 AM

শনিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, ওষুধটি পরীক্ষা করে ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।

“গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে- বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের প্যারাসিটামল ১২০ মিলি গ্রাম ও ৫ মিলি গ্রাম সিরাপের (ব্যাচ নং ৩২১১৩১২১, উৎপাদন তারিখ ১২/২০২১, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ১১/২০২৩) ওষুধ সেবন করে একই পরিবারের দুই শিশু মারা গেছে।

“এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশে বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অবস্থিত পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে ওই ব্যাচের নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হল।

বৃহস্পতিবার রাতে আশুগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামে ‘প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ার পর’ ইয়াসিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে তাদের পরিবার। শিশু দুটি ওই গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক সুজন খানের ছেলে।

ঘটনার বর্ণনায় শিশুদের মা বলেন, দুই ছেলের জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ির পাশের একটি ফার্মেসি থেকে তারা নাপা সিরাপ এনে খাওয়ান। তারপর দুই ছেলেরই বমি শুরু হয়।

অবস্থার অবনতি হলে তাদের প্রথমে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, এরপর জেলা সদর হাসাপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে আনার পথে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ইয়াসিনের মৃত্যু হয়। আর বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় মারা যায় মোরসালিন।

ওই ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে পুলিশ। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলান সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ। দুটি তদন্ত কমিটি করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অধিদপ্তরের বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয় নাপা সিরাপের ওই ব্যাচের ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করছে। তবে ওই ব্যাচের ওষুধ বিক্রি বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।"

বাজারে থাকা নাপা সিরাপের ওই ব্যাচের ওষুধ কেউ খেয়ে ফেললে কী হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, "ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এখনো এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়নি। তবে বিষয়টি ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে চলে আসায় মানুষ সতর্ক হয়ে গেছে। যারা বিক্রি করে তারাও সাবধান হয়ে গেছে। এ কারণে এই ওষুধ বিক্রি এমনিতেই বন্ধ থাকবে।"

এ বিষয়ে বেক্সিমকো ফারমাসিউটক্যালসের বক্তব্য জানতে কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজাকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস পাঠালেও সাড়া দেননি।