বুস্টার ডোজে তিন টিকা, বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই

করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেশে দেওয়া হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2021, 06:54 AM
Updated : 29 Dec 2021, 06:54 AM

যারা বুস্টার ডোজ নেওয়ার যোগ্য, তারা আগের দুই ডোজে যে টিকাই নিয়ে থাকুন না কেন, তৃতীয় ডোজে তাদের দেওয়া হবে ওই তিন টিকার মধ্যে যে কোনো একটি। 

তবে এক্ষেত্রে টিকাগ্রহীতার বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। যে আগে যে হাসপাতাল থেকে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, সেই হাসপাতাল থেকে তার কাছে বুস্টার ডোজের তারিখ জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হবে। সেই কেন্দ্রে যে টিকা থাকবে, সেটাই তাকে নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে, বুধবার আরও কয়েকটি জেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো জেলাতেই বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।

যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং যারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, তাদের করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পরে তারা বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজ নিতে পারবেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়ার শুরুর দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল’ অনুসরণ করে দেশে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে।

তবে মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় বড় পরিসরে বুস্টার ডোজ দেওয়ার শুরুর দিন ফাইজারের পাশাপাশি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও দেওয়া হয়।

দেশে এখন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হচ্ছে।

তবে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেওয়ার সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটি-নাইট্যাগ।

নাইট্যাগের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ যে টিকাই দেওয়া হোক না কেন, তৃতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ফ্লোরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বুস্টার ডোজ হিসেবে তিনটি টিকা নির্ধারণ করা হলেও টিকাগ্রহীতার পছন্দ অনুযায়ী টিকা নেওয়ার সুযোগ নেই।

“টিকা দেওয়া হবে কেন্দ্রে টিকা থাকা সাপেক্ষে। মূলত আমরা ফাইজার দিচ্ছি। কিন্তু ফাইজারের টিকা (সংরক্ষণে) কিছু রিকয়ারমেন্টস থাকে, এজন্য অনেক জায়গায় ফাইজার নেওয়া যাচ্ছে না। সেসব জায়গায় আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা মডার্না দেব। বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।”

ঢাকাতেও কিছু কেন্দ্রে ফাইজার দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, “বিশেষ করে ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা যেখানে টিকা দিচ্ছি, সেখানে। সেখানে হয়ত মডার্না দেওয়া হবে। এটা হচ্ছে আমাদের পরিকল্পনা।”

বুস্টার ডোজ কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি।

সব জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার টিকাদান কেন্দ্রে পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।

মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “এসএমএস পাঠাতে দেরি হওয়ায় সব জায়গায় এক দিনে বুস্টার ডোজ শুরু করা যায়নি। পর্যায়ক্রমে তা শুরু হচ্ছে।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ঢাকার বাইরে ফরিদপুর, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, রংপুর, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, মেহেরপুরে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদেশে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৫৫ জনকে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৭ জনই ঢাকার।

এর আগে ১৯ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরুর দিন ৫৪ জন কোভিড টিকার তৃতীয় ডোজ পেয়েছিলেন।