ওমিক্রন: জনসমাগম সীমিত করার সুপারিশ পরামর্শক কমিটির

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে ভ্রমণ সতর্কতা জারির পাশাপাশি সব ধরনের সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2021, 11:31 AM
Updated : 28 Nov 2021, 12:56 PM

কমিটির প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ রোববার তাদের সভা শেষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ শ্রেণিভুক্ত করেছে।

এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশ ওমিক্রনের বিস্তার ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ওই অঞ্চলের কয়েকটি দেশের যাত্রীদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেরও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

সভা শেষে পাঠানো কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ সমস্ত দেশ এবং যে সমস্ত দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে সে সমস্ত দেশ হতে যাত্রী আগমন বন্ধ করার সুপারিশ করা হচ্ছে।”

কেউ গত ১৪ দিনের মধ্যে এসব দেশে ভ্রমণ করে থাকলে তাদের বাংলাদেশে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা এবং কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়লে আইসোলেশনে রাখার কথা বলা হয়েছে সুপারিশে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের প্রতিটি প্রবেশ পথে স্ক্রিনিং-পরীক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত ব্যবস্থা আরও কঠোরভাবে পালন করা (স্কুল কলেজসহ), চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা ও বিভিন্ন (রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়) সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করার সুপারিশ করা হল।”

পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরীক্ষায় জনগণকে উৎসাহিত করার জন্য বিনামূল্যে পরীক্ষা করার সুযোগ আবার ফিরিয়ে আনার সুপারিশ করেছে পরামর্শক কমিটি।

অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে গেছে, সেই হিসেবে আমাদের মনে হয় বাংলাদেশেও এ বিষয়ে প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। পৃথিবীর অনেক দেশ সাউথ আফ্রিকাসহ কয়েকটি যোগাযোগ বন্ধ করেছে, আমরা মনে করি আমাদেরও এখন সেটি করা উচিত।”

গত কিছুদিনে দেশে সংক্রমণ কম থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানা থেকে ‘খুব ঢিলেঢালা ভাব’ দেখা যাচ্ছে জানিয়ে এক্ষেত্রেও কড়াকড়ি বাড়ানোর পক্ষে মত দিচ্ছেন কমিটির সভাপতি।

তিনি বলেন, “রাদেশে এখন যেভাবে জনসমাগম হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে, তাতে সংক্রমণ আবার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

“এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়, যদি আমরা আগের মতোই সবকিছু করি তাহলে সংক্রমণ অবশ্যই বেড়ে যাবে। সে কারণে আমরা বেশি জোর দিয়েছি বিভিন্ন সমাবেশে লোকসমাগম সীমিত আকারে করা।”

সভা শেষে কমিটির সদস্য সচিব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ওমিক্রন নিয়ে বৈশ্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত যে তথ্য আছে, তাতে এ ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়ায়।

“কেইস ফ্যাটালিটি বা সিভিয়ারিটি এখনও খুব বেশি না। কিন্তু আমি বলব যে ভ্যারিয়েন্টই হোক, স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নাই। যত ভ্যারিয়েন্টই আসুক, প্রতিরোধের উপায় হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সে জায়গাটায় মনে হয় আমরা উপেক্ষা করছি। যদি ভ্যাকসিন নিই এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তাহলে যে ভ্যারিয়েন্টই আসুক, আমাদের অসুবিধা হবে না।”

কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম, অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মোহিত, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।