ডায়াবেটিস রোগীদের ‘৬২%’ জানে না তারা আক্রান্ত

বাংলাদেশে যত সংখ্যক ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে, তার অর্ধেকের বেশি জানেনই না যে তারা আক্রান্ত। ফলে চিকিৎসাও নেন না তারা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2021, 04:10 PM
Updated : 14 Nov 2021, 04:10 PM

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়। ‘বাংলাদেশে ডায়াবেটিস : বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম।

নানা গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১২ দশমিক ৮ শতাংশ ডায়াবেটিস আক্রান্ত।

“মানে প্রায় পৌনে ২ কোটি মানুষের ডায়াবেটিস আছে। আক্রান্তদের ৬২ শতাংশই জানে না তাদের ডায়াবেটিস আছে। ৩৫ শতাংশ নিয়মিত চিকিৎসা নেয়, বাকিরা নিয়মিত চিকিৎসার বাইরে আছে।”

মানুষের খাদ্যাভ্যাসসহ নানা কারণে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানান ডা. শাহজাদা।

“কিছু জেনেটিক ত্রুটি আছে, বিষয়টি নিয়ে আমরা গবেষণা করছি। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রম না করা। এছাড়া প্রযুক্তির নানা সুবিধা নিয়ে আমরা ধীরে ধীরে একটা অকর্মণ্য জাতিতে পরিণত হচ্ছি। পাশাপাশি মানসিক চাপ, পরিবেশ দূষণ, খাদ্যে ভেজাল সবকিছু মিলিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ে আমাদের ঝুঁকি বাড়ছে।”

অনুষ্ঠানে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে ডায়াবেটিক চিকিৎসায় নানাক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।

“আমাদের চিকিৎসক স্বল্পতাসহ নানা সমস্যা আছে। এজন্য আমাদের আরও যেমন জনবল দরকার, তেমনি আমাদের গবেষক দরকার।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বারডেম হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান।

এতে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবুল হাসানাত, ন্যাশনাল হেলথ কেয়ার নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম এ সামাদ, ইউনাইটেড হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. হাফিজুর রহমান।ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস নিয়ে গবেষণার জন্য তরুণ গবেষকদের সানোফি বাংলাদেশের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান ডা. এবিএম কামরুল হাসান, বিএসএমএমইউর অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম, মার্কস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাজমা আক্তার, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন রহমান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রধান এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারহানা আক্তার এবার পুরস্কার পান।