ডেঙ্গু রোগী ২৫ হাজার ছাড়াল

চলতি বছর মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2021, 04:37 PM
Updated : 10 Nov 2021, 05:26 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বুধবার জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় সব মিলিয়ে ১৬৩ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তাতে চলতি বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২৫ হাজার ৬৫ জন।

অবশ্য যারা ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাননি, কিংবা পরীক্ষাই করাননি, তাদের হিসাব এ তালিকায় আসেনি। 

গত এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কারও মৃত্যুর খবর আসেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায়। এ বছর সব মিলিয়ে ৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাস রোগে। ২৪ হাজার ৩২০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

বর্তমানে দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৪৯ জন ডেঙ্গু রোগী, যাদের ৫৩৭ জনই ঢাকা মহানগরীর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নতুন রোগীদের ১৩১ জনই ঢাকার। আর ঢাকার বাইরের বিভাগগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩২ জন।

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে এ মৌসুমে জুলাই থেকে উদ্বেগ বাড়াতে থাকে ডেঙ্গু। অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল সবেচেয়ে বেশি। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে তা কিছুটা কমতে থাকে।

এ বছর মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসেই ভর্তি হয়েছেন ১৫ হাজার ৫৩৯ জন। এ দুই মাসে মারা গেছেন ৫৭ জন ডেঙ্গু রোগী।

গত সেপ্টেম্বর মাসে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮৪১ জন রোগী ডেঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হন। মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয় ওই মাসে।

এর আগে অগাস্ট মাসে ৭ হাজার ৬৯৮ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। আর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৩৪ জনের। 

অক্টোবর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গেছেন ৫ হাজার ৪৫৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক রশিদ উন নবী বলেন, তার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এখন কমে এসেছে। সব মিলিয়ে এখন ৭২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরও কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরীর বলেন, আগে শুধু বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রবণতা লক্ষ্য করা গেলেও এখন বর্ষা মৌসেুমের পরেও ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার সাথে বৃষ্টিপাত ও পানি জমে থাকার একটি প্রবণতা রয়েছে বলে জানান তিনি।

“আমাদের দেশে শুধু বর্ষাকালে না, তার আগে ও পরেও বৃষ্টি হয়। বসতবাড়ির অনেক জায়গায় সারাবছরই পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এ কারণে মওসুমের বাইরেও ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে।”

তিনি বলেন, ডেঙ্গুর মত চিকনগুনিয়াও ছড়ায় এইডিস মশার মাধ্যমে। ভারতে এখন যে জিকা ভাইরাস ছড়াচ্ছে, সেটাও এইডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়।

“এইডিস মশা নিধনে সারাদেশে এক সাথে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালাতে হবে। সচেতনামূলক কর্মসূচি বছরব্যাপী চালাতে হবে।”

২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করায় এক লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন, এ বছরই সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এই ভাইরাস জ্বরে।

সে বছর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আসা ২৬৬টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৪৮ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছিল আইইডিসিআর।