গণটিকার দ্বিতীয় ডোজ ৭ সেপ্টেম্বর থেকে

অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে গণ টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় যারা করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2021, 08:02 AM
Updated : 25 August 2021, 08:02 AM

কোথায় কীভাবে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে, কীভাবে তাদের জানানো হবে, সেসব বিষয়ে  বুধবার বিকালে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।

সকালে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার মিলনায়তনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ভেন্টিলেটর বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ডোজ শুরুর আগে আরও টিকা আসবে। ফলে দ্বিতীয় ডোজ দিতে কোনো সমস্যা হবে না।”

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণ টিকাদান শুরু হয়।

কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে টিকার সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

তখন সরকার অন্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে। চীন থেকে জরুরিভাবে সিনোফার্মের টিকা কেনার চুক্তি করা হয়। এখন সিনোফার্মের টিকার পাশাপাশি কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ।

কিছু টিকা হাতে পাওয়ার পর মহামারীর বিরুদ্ধে সুরক্ষা বলয় তৈরি করতে গত ৭ অগাস্ট থেকে ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে ছয় দিনের গণটিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে সরকার।

তাতে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া মিললেও সরবরাহ কম থাকায় অনেককে টিকা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনারও অভিযোগ আসে। বিষয়টি নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও আলোচনা হয়।

এই প্রেক্ষাপটে গত ২৩ অগাস্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ছয় দিনের বিশেষ কর্মসূচির মত করে গণটিকা কার্যক্রম আপাতত আর হচ্ছে না; যে পরিমাণ টিকা হাতে থাকবে সেই পরিমাণ নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হবে।

গণটিকা কার্যক্রমে প্রথম ডোজ দেওয়ার জন্য আলাদা কেন্দ্র ও ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছিল। যারা নিবন্ধন করেননি, তারা এনআইডি নিয়ে গিয়ে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করে টিকা দিতে পেরেছেন।

সেরকম আয়োজন আর না হলে তাদের দ্বিতীয় ডোজ কোথায় কীভাবে দেওয়া হবে, সেটা তারা কীভাবে জানাতে পারবেন- এসব বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। 

এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, “এই টিকাদান কীভাবে হবে তা নির্ধারণ করতে বুধবার বিকালে একটা মিটিং আছে। সেখানে ঠিক করা হবে।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমুহ) ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন মিঞাসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দুটি চালানে যে ৫৬২টি পোর্টেবল আইসিইউ ভেন্টিলেটর পাঠিয়েছেন, সেগুলো হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সারা হয় এ অনুষ্ঠানে।

অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা চার চিকিৎসক নেফ্রোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক, কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মাসুদুল হাসান, জাতিসংঘের সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহমুদ উস শামস চৌধুরী, কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. চৌধুরী হাফিজ আহসান এবং কানাডায় বসবাস করা চিকিৎসক আরিফুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এসব ভেন্টিলেটর পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, সবগুলো ভেন্টিলেটর এই মুহূর্তে বিতরণ করা হচ্ছে না। ৫৬১টি ভেন্টিলেটরের মধ্যে ৩০০টি এখন বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।