চীন থেকে কেনা টিকা পেতে অপেক্ষায় থাকতে বললেন রাষ্ট্রদূত

চীনের উপহারের পাঁচ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা বুধবার নাগাদ পৌঁছালেও কেনা টিকা পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 May 2021, 08:06 AM
Updated : 10 May 2021, 11:37 AM

সোমবার ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

লি জিমিং বলেন, টিকা নিয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং বাংলাদেশে টিকা পাঠানোর বিষয়টি চীন ‘খুবই ইতিবাচকভাবে’ দেখছে।

“কিন্তু সমস্যা হল, বাংলাদেশ সরকার চীনের সিনোফার্মের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে। এখন, টিকা পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতাদের দীর্ঘ কিউ তৈরি হয়েছে। আর স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ টিকার জন্য সেই লাইনের সম্মুভাগের খুব কাছাকাছি অবস্থানে নেই।     

“আমি বলতে চাইছি, সরকারি পর্যায়ে চীন থেকে কেনা টিকার প্রথম চালান হাতে পেতে আমাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।”

কতদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে- সেই ধারণা দিতে গিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “আপাতত আমি যেটুকু বলতে পারি, বাণিজ্যিকভাবে বাংলাদেশের টিকা কেনার জন্য আমার তরফ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা আমি করব। বেইজিংয়ে আমার সহকর্মীরা প্রথমে আমাকে যেটা বলেছে, ওই লাইন এত বেশি দীর্ঘ যে ডিসেম্বরের আগে টিকা পাওয়ার আশা না করাই ভালো।  

“আমি তাদের বলেছি- যত দ্রুত সম্ভব এখানে টিকা দরকার। এরপর আমার মনে হচ্ছে, ডিসেম্বরের অনেক আগেই আমরা পারব, তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ বছরের প্রথমার্ধে সেটা হবে না।”

প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতে চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, তার সরকারের উপহারে ৫ লাখ ডোজ টিকার চালান ১২ মে বাংলাদেশে আসবে।

তিনি বলেন, টিকা উপহার দেওয়ার জন্য চীন যোগাযোগ করেছিল এ বছর ৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার টিকার জরুরি অনুমোদনের সময় নিয়েছে প্রায় ৩ মাস।

“ফলে বাংলাদেশে টিকা বিক্রির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়টি নানাভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। আমি আশা করব, বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের কাজে আরও উদ্যোগী হবে, বিশেষ করে মহামারীর মত বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা যখন আমাদের করতে হচ্ছে।”

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনে গত ফেব্রুয়ারিতে গণটিকাদান শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ রাখায় কেনা টিকার পুরো চালান বাংলাদেশ সময়মত পাচ্ছে না। ফলে অন্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

এর অংশ হিসেবে ২৯ এপ্রিল সিনোফার্মের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তার আগে রাশিয়ায় তৈরি স্পুৎনিক ভি টিকাও বাংলাদেশে অনুমোদন পায়।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করা করোনাভাইরাসের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কাছ থেকেও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে।