তিনি বলেছেন, মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে; মাস্ক না পরলে-স্বাস্থ্যবিধি না মানলে জরিমানা করা হবে। এ বিষয়ে জেলা পর্যায়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে ইতোমধ্যে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তাদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, আমাদের সিদ্ধান্ত যেগুলো ছিল, সেগুলো যেন প্রয়োগ করে। অর্থাৎ মোবাইল কোর্ট করে। যারা মাস্ক না পরে তাদেরকে জরিমানা করবে। নো মাস্ক-নো সার্ভিস কর্মসূচিকে আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গেস্ট কন্ট্রোল করবে।”
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় গত ১৯ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, এক পর্যায়ে তা ৩ শতাংশেরও নিচে নেমে আসে। এর মধ্যে সারা দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদানও শুরু হয়।
কিন্তু মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে। সোমবার তা ২৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মত ৯ শতাংশ পেরিয়ে গেছে।
মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ৫৯ হাজার ১৬৮ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৫৭১ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম আগের দিন বলেছেন, এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই তরুণ, আক্রান্তদের অনেককেই আইসিইউতে ভর্তি করা লাগছে। এখন কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনে বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
এক বছরের বেশি সময় পর ৩০ মার্চ থেকে স্কুল ও কলেজ খোলার যে তারিখ সরকার ঠিক করেছে, ভাইরাসের সংক্রমণ এভাবে বাড়লে তা পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বরে শিক্ষামন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন। সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীও একই কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এ বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে। এটাকে (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত) রিভিউ করতে পারে। সংক্রমণ যদি বেড়ে যায়, তাহলে নিশ্চয় তারা হয়তো এটাকে রিভিউ করবেন। আর যদি করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকে, তাহলে হয়ত তারা তাদের মত করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
গত কয়েক দিনে সংক্রমণ ও মৃত্যু যে হারে বাড়ছে তাতে ‘আতঙ্কিত না হলেও উদ্বিগ্ন’ জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে তিনি এ বিষয়ে কথাও বলেছেন।
“কথা বলে আমাদের কাছে যেটা মনে হয়েছে, লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। তারা সিলেট, কক্সবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কোনো মাস্ক পরছে না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না। আমরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগছি যে করোনাভাইরাস নাই। নো মাস্ক নো সার্ভিস কর্মসূচিকে অবহেলা করছি।”
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।