কোভিড-১৯: দেশে এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগী ১৩% কমেছে

দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের গতি ধারাবাহিকভাবে কমছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2021, 09:34 AM
Updated : 6 Feb 2021, 10:32 AM

এক সপ্তাহে নতুন রোগী শনাক্তের হার প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে, মৃত্যুর হার কমেছে ২৬ শতাংশ। দৈনিক শনাক্তের হারও ৩ শতাংশের নিচেই রয়েছে।

দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার যে ‍বুলেটিন দিয়েছে, তাতে এই তথ্য পাওয়া যায়।

বুলেটিনে ২৪-৩০ জানুয়ারি এবং ৩১ জানুয়ারি-৬ ফেব্রুয়ারির সংক্রমণ পরিস্থিতির তুলনা করে বলা হয়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন শনাক্ত রোগী কমেছে ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, মৃত্যু কমেছে ২৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

এই সময়কালে নমুনা পরীক্ষাও ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কম হয়েছে বলে জানানো হয়। অন্যদিকে সুস্থতার হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

গত সাত দিনে ৯৭ হাজার ১১১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার রোগী শনাক্ত হয়, মারা যান ৭৯ জন।

তার আগের সপ্তাহে ৯৮ হাজার ১০৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার ৪৪৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। মারা গিয়েছিল ১০৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকায় কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর ৩ হাজার ২৩৩টি শয্যার মধ্যে ২ হাজার ৫৩টিই এখন খালি। ২৫৭টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে খালি আছে ১৭৫টি।

আর সারাদেশ মিলিয়ে হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজারের কোভিড-১৯ শয্যার মধ্যে প্রায় ৯ হাজারই খালি আছে, রোগী আছে দেড় হাজার শয্যায়। আর ৫৮২টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে কোভিড-১৯ রোগী আছে ১৮৯টিতে, ৩৯৩টিই এখন খালি।

বুলেটিনে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩০৫ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে শনাক্ত রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৭৭০।

গত একদিনে ৮ জনের মৃত্যুতেদেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ১৯০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৪১৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৪১ জন হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২০৬টি ল্যাবে ১২ হাজার ১৩৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষিত নমুনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৮টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ; তা ৫ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বাধিক শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বাধিক মৃত্যু।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩১তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।

 

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ আর নারী ২ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে  এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিলো।

মৃতদের মধ্যে ৫ জন ঢাকা বিভাগের, ২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ১৯০ জনের মধ্যে ৬ হাজার ২০৬ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৯৮৪ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৪০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ২ হাজার ৪৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯৩৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪০৮ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৬৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৬ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ৪ হাজার ৫৬৪ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৫০৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৬৮ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৫৪ জন খুলনা বিভাগের, ২৪৭ জন বরিশাল বিভাগের, ৩০৭ জন সিলেট বিভাগের, ৩৫৭ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৯০ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।