ভারতে অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদনে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সায়

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা শর্তসাপেক্ষে অনুমোদনের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সবুজ সংকেত পেয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2021, 12:52 PM
Updated : 1 Jan 2021, 01:38 PM

বিষয়টি সম্পর্কে জানেন, এমন দুজনের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (সিডিএসসিও) বিশেষজ্ঞরা শুক্রবার বৈঠক করে অনুমোদনের পক্ষে সায় দেন।   

এনডিটিভি জানিয়েছে, সিডিএসসিওর সায় পাওয়ায় এখন বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেলের দপ্তরে (ডিসিজিআই) পাঠানো হবে। 

ডিসিজিআইয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর এ মাসেই নাগরিকদের টিকা দেওয়া শুরু করতে চায় ভারত সরকার। সেজন্য শনিবার সব রাজ্যে মহড়া হওয়ারও কথা রয়েছে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে ইতোমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার।

জানুয়ারির মধ্যেই ওই টিকার প্রথম চালান দেশে পৌঁছে যাবে বলে এর আগে আশা প্রকাশ করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। 

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য গত ৩০ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ডের ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এরপর এ টিকা আর্জেন্টিনাতেও অনুমোদন পায়।

এনডিটিভি লিখেছে, তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী দামের অক্সফোর্ডের টিকা অনুমোদনের জন্য সায় পাওয়ার বিষয়টি ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।  

যুক্তরাষ্ট্রের পর ভারতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার এই দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে এক কোটি ২ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে ভারতে ত্রিশ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে দেশটির সরকার।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, আগামী এক বছরে তারা পুরো বিশ্বের জন্য তিন বিলিয়ন ডোজ টিকা তৈরি করবে। আর ভারতে এই টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়া।

ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পূনাওয়ালা জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে ৫ কোটি ডোজ টিকা তৈরি করে ফেলেছেন। আগামী মার্চের মধ্যে অন্তত ১০ কোটি ডোজ তারা বাজারে ছাড়তে চান।

সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়ার কাছ থেকে এই টিকা বাংলাদেশে সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে সরবরাহ করার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও এই টিকা বিক্রির পরিকল্পনার কথা বেক্সিমকো ইতোমধ্যে জানিয়েছে।

অক্সফোর্ডের টিকা রেফ্রিজারেটরের সাধারণ তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়; ফলে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে এই টিকা পৌঁছানো তুলনামূলক সহজ। 

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মডার্নার টিকা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়, যা সাধারণ রেফ্রিজারেটরে সম্ভব নয়।

প্রত্যেকের জন্য অক্সফোর্ডের টিকার দুটো করে ডোজ নিতে হবে। দুই ডোজের মধ্যে চার সপ্তাহের ব্যবধান থাকবে। বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে অক্সফোর্ডের টিকার প্রতি ডোজের দাম তিন পাউন্ডের মত (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৯ টাকা)। 

পুরনো খবর