জানুয়ারিতেই অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়ার আশা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

জানুয়ারি মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা আসবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2020, 11:12 AM
Updated : 30 Dec 2020, 11:24 AM

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য এই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়ার দিনই এই আশাবাদ জানিয়েছেন মন্ত্রী।

নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের দৃষ্টিতে সবচেয়ে কার্যকরভাবে করোনাভাইরাস সামাল দেওয়া দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০ নম্বরে থাকা উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন আনার প্রক্রিয়া মোটামুটি শেষ। ভ্যাকসিন আসার একটা সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছিল জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তবে অনুমোদনের প্রক্রিয়া দ্রুত হওয়ায় আরও আগে পাওয়ার আশা করছে সরকার।”

ছবি- রয়টার্স

যুক্তরাজ্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন দেওয়ায় এখন ভারতও অনুমোদন দিয়ে দেবে বলে মন্তব্য করেন জাহিদ মালেক।

“হয়ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমোদন দিয়ে দেবে। সেরাম ইনস্টিটিউট আমাদের যেভাবে বলেছে তাতে আমরা আশা করছি, জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বা তার আগেও আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যেতে পারি। যেহেতু এর অনুমোদন প্রক্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি হচ্ছে।”

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে ইতোমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। এ কারণেই এ মহামারী মোকাবেলায় সফল দেশগুলোর তালিকায় ২০তম স্থানে বাংলাদেশকে রেখেছে ব্লুমবার্গ।”

সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে শীতে করোনাভাইরাসের ঢেউ সামালে বিশ্বজুড়ে দেশগুলো যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তার আলোকে র‌্যাংকিং করেছে ব্লুগবার্গ। সেখানে প্রথম স্থানে রয়েছে নিউ জিল্যান্ড, এরপরে রয়েছে তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে ও সিঙ্গাপুর। বাংলাদেশের পরে স্থান হয়েছে জার্মানির, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৩৭তম, তাদের দুই ধাপ পরে আছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থান যুক্তরাজ্যের এক ধাপ উপরে ২৯তম।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে।

“করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশ লকডাউনে চলে গেছে। সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো লকডাউন ছিল না। কারও কোনো ছুটি ছিল না।”

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশ যে পরিশ্রম করেছে তার ফল ব্লুমবার্গের এ গবেষণা জরিপ। দেশে অনেকেই সমালোচনা করেছে। তবে বিশ্ব বাংলাদেশের অর্জনের ঠিকই স্বীকৃতি দিয়েছে।

“বিশ্ব গণমাধ্যমে এসব অর্জনের কথা বলা হয়। ব্লুমবার্গের এই তথ্য তারই প্রমাণ। আমাদের যে পরিশ্রম করেছি তার স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। এটা সরকারের পরিশ্রমের ফল।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর,  বিসিপিএসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মুবিন খান, স্বাচিপের সভাপতি ডা. এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।