মৃত্যু-হাসপাতাল বাস কোনোটাই কমায় না রেমডেসিভির: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বহুল আলোচিত ওষুধ রেমডেসিভির সেবনে রোগীর হাসপাতালে অবস্থানের মেয়াদ কমা বা জীবনরক্ষায় প্রভাব খুব সামান্য বা তা কোনো প্রভাবই ফেলে না বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক গবেষণায় বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2020, 03:20 PM
Updated : 16 Oct 2020, 03:20 PM

শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ৩০টির বেশি দেশের ১১ হাজার ২৬৬ জন রোগীর উপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যুক্তরাষ্ট্রের গিলিয়াড সায়েন্সেস ইনকর্পোরেশন উৎপাদিত রেমডেসিভিরের প্রভাব সম্পর্কে এই অভিমত পাওয়া গেছে।

চারটি ওষুধ নিয়ে কাজ করা এই গবেষণায় রেমডেসিভির ছাড়াও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, এইডসনিরোধী লোপিনাভির/রিটোনাভির এবং ইন্টারফেরনের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার বলেছে, গবেষণায় দেখা গেছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের হাসপাতালে অবস্থানের সময় কমানো বা মৃত্যু ঠেকাতে ওষুধগুলো সামান্যই প্রভাব রেখেছে বা কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি।

এই গবেষণার ফলাফল এখনও পর্যালোচনা হয়নি। তবে তা মুদ্রণ পূর্ববর্তী সার্ভারে আপলোড করা হয়েছে।

সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় উল্লফন দেখা দিলে ওই মরিয়া পরিস্থিতিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকারিতার কোনো প্রমাণ না থাকার পরও চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এনএইচসি) কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর শরীরে লোপিনাভির’ ও রিটোনাভির প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল।

গত এপ্রিলে রেমডেসিভিরের সহায়ক ভূমিকার ‘সুস্পষ্ট’ প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) থেকে জরুরি অনুমোদন পায় রেমডেসিভির; এরপর থেকে বিভিন্ন দেশও ইবোলা ঠেকাতে তৈরি হওয়া এই ওষুধ কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর তার চিকিৎসায়ও ছিল রেমডেসিভির।

এই মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে রেমডেসিভিরের কার্যকারিতা নিয়ে গিলিয়াড পরিচালিত এক গবেষণায় দাবি করা হয়, ‘প্লাসেবো’ সেবনকারীদের তুলনায় এই ওষুধ সেবনকারীরা অন্তত পাঁচ দিন আগে সুস্থ হয়ে ওঠেন।

এক হাজার ৬২ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় গিলিয়াড।

এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই গবেষণাকে ‘খাপছাড়া’ আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিটি।  গবেষণার তথ্য-উপাত্ত এখনও রিভিউ না হওয়ার বিষয়টি সামনে এনেছে তারা।

গত বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্য স্বামীনাথান বলেন, গবেষণা চলাকালে রোগীর সেরে ওঠায় অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় গত জুনে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ও লোপিনাভির/রিটোনাভির প্রয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে অন্য ওষুধগুলো নিয়ে ৩০টি দেশের ৫০০ হাসপাতালে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি বলেন, “আমরা এখন পরবর্তীটা নিয়ে ভাবছি। আমরা মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির দিকে তাকিয়ে আছি; আমরা চিন্তা করছি ইম্যুনোমোডুলেটরস এবং গত কয়েক মাসে তৈরি হওয়া নতুন কিছু অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ নিয়ে।”