হেপাটাইটিস সির গবেষণায় চিকিৎসার নোবেল

যাদের গবেষণার মধ্য দিয়ে হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছিল, সেই তিন বিজ্ঞানী পেলেন নোবেল পুরস্কার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2020, 10:25 AM
Updated : 6 Oct 2020, 04:50 PM

সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট সোমবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে চলতি বছরের বিজয়ী হিসেবে মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভি জে অল্টার ও চার্লস রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞনী মাইকেল হটনের নাম ঘোষণা করে।

কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট বলেছে, হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস আবিষ্কার করা সম্ভব হওয়ায় রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ শনাক্ত করার পদ্ধতি এবং ওষুধ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যা লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর ৭ কোটির বেশি মানুষ হেপাটাইটিস ‘সি’তে আক্রান্ত হন এবং চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। হেপাটাইসিস যকৃতের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি এবং লিভার-ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।

 

গত শতকের ষাটের দশকে অন্যের কাছ থেকে রক্ত নেওয়া রোগীদের অনেকেই এক ধরনের ক্রনিক হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছিলেন, যার কারণ চিকিৎসকরা ধরতে পারছিলেন না।

ততদিনে হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘বি’ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু মার্কিন গবেষক হার্ভি অল্টার ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মত বুঝতে পারেন, এই হেপাটাইটিসের কারণ অন্য কোনো ভাইরাস।

তিনি দেখান, আক্রান্ত রোগীর রক্ত শিম্পাঞ্জিকে দিলে, ওই প্রাণীর দেহেও একই অসুস্থতা তৈরি হয়। তার ওই গবেষণার পর নতুন ধরনের ওই হেপাটাইটিসের কারণ অনুসন্ধান শুরু হয়।

এরপর ব্রিটিশ গবেষক মাইকেল হটন ১৯৮৯ সালে সেই নতুন ভাইরাসের জিনোম আলাদা করতে সক্ষম হন। তখন এর নাম দেওয়া হয় হেপাটাইটিস ‘সি’।

এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয় আরেক মার্কিন গবেষক চার্লস রাইসের গবেষণার মধ্য দিয়ে। তিনি জিন বদলে দেওয়া একটি হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস শিম্পাঞ্জির যকৃতে ঢুকিয়ে দিয়ে দেখান যে, ওই ভাইরাসের কারণেই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে সেই শিম্পাঞ্জি।

 

এবার নোবেল পুরস্কারের ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনার ভাগ করে নেবেন তিন বিজ্ঞানী।

প্রাণীর কোষ কীভাবে অক্সিজেনের প্রাপ্যতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়, সেই রহস্যের কিনারা করে গতবছর চিকিৎসায় নোবেল পান যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম জি কায়েলিন, যুক্তরাজ্যের স্যার পিটার জে র্যাটক্লিফ ও যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেগ এল সেমেনজাভ

মঙ্গলবার পদার্থ, বুধবার রসায়নে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার আসবে সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা।

এরপর শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১২ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।