কোভিড-১৯ শনাক্তে দেশে অনুমোদন পেল ‘অ্যান্টিজেন টেস্ট’

নতুন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2020, 03:57 PM
Updated : 21 Sept 2020, 04:03 PM

গত মার্চে বাংলাদেশে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এই পর্যন্ত শুধু আরটি-পিসিআর টেস্টই চলে আসছিল।

তবে পরীক্ষায গতি আনতে অ্যান্টিজেন টেস্টের পক্ষে বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ডা. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অনুমোদনের কথা জানানো হয়।

কারও দেহে সংক্রমণ ঘটেছে কি না, তা দ্রুততম সময়ে জানার পদ্ধতি অ্যান্টিজেন টেস্ট। এজন্য আক্রান্ত ব্যক্তির নাক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) পদ্ধতি সংক্রমণ শনাক্তে বিশ্বে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত।

তবে এই পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহের পর ফল পেতে বেশ সময় লেগে যায়, সেখানে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে আধা ঘণ্টার মধ্যে জানা যায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে কি না।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, অতি স্বল্প সময়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য সারা দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের প্রস্তাব এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ সেপ্টেম্বরের ‘ইনটেরিম গাইডেন্স’ অনুসরণ করে দেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সরকারি পিসিআর ল্যাব এবং সব স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে অ্যান্টিজেনভিত্তিক টেস্ট চালুর অনুমতি দেওয়া হল।

এতে আরও বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রক্রিয়াধীন কোভিড-১৯ ল্যাব সম্প্রসারণ নীতিমালাটি চূড়ান্ত হলে তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

নতুন করোনাভাইরাস দ্রুত শনাক্ত করতে র‌্যাপিড টেস্ট চালু করতে বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়ে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারগরী পরামর্শক কমিটির সভায় পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট কার্যক্রম চালুর পরামর্শ দেয়।

সেদিন বৈঠকের পর গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বলেছিল, বর্তমানে আরটিপিসিআরের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে যার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ালে আরও বেশি কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অ্যান্টিজেন পরীক্ষা অনুমোদন পাওয়ায় নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম আরও গতি পাবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।

তিনি সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এতে দ্রুত কম খরচে কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।

“আরটিপিসিআর মেশিন বসাতে অনেক টাকা প্রয়োজন, এ কারণে যেসব জায়গায় আমরা আরটিপিসিআর বসাতে পারিনি, সেখানে অ্যান্টিজেন টেস্ট কাজে আসবে। যেসব জেলায় আরটিপিসির নাই সেখানে অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে। টেস্টের সংখ্যা বাড়লে আমরা বলতে পারব আমাদের দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে আছে।”

গত ৫ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন নীতিমালার খসড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

পরে গত ২৪ জুলাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় অ্যান্টিজেন টেস্ট অনুমোদনের সিদ্ধান্তের কথা জানান।