কোভিড-১৯: দেশে শনাক্ত রোগী ৩ লাখ ছাড়াল

ঊনচল্লিশ দিনে আরও এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ায় দেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2020, 09:28 AM
Updated : 26 August 2020, 10:34 AM

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ৫১৯ রোগী শনাক্ত এবং ৫৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায়।

নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ লাখ ২ হাজার ১৪৭ জনে। আর মৃতের সংখ্যা পৌছছে ৪ হাজার ৮২ জনে।

আইইডিসিআরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মধ্যে আরও ৩ হাজার ৪২৭ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার ১৮৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

শনাক্ত রোগীর সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে পঞ্চদশ অবস্থানে রয়েছে। বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৪০ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আট লাখ।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছিল তিন মাস পর গত ১৮ জুন; তার ঠিক এক মাসে (১৮ জুলাই) ২ লাখ রোগী শনাক্তের খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর পরের এক লাখ রোগী শনাক্তে নয় দিন বেশি লাগল। গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

বাংলাদেশে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দাবি করলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা পরীক্ষা কম হওয়ায় রোগীও ধরা পড়ছেন কম।

ফি নির্ধারণসহ নানা কারণে নমুনা পরীক্ষায় মানুষের নিরুৎসহিত হওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন।

সেই কারণে সম্প্রতি নমুনা পরীক্ষার ফি অর্ধেক কমিয়ে এনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সবাইকে সন্দেহ হলেই নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিপ্তরের বুধবার দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০টি। ছয় মাসে সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৬১টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬২ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৯ জন, নারী ১৫ জন। তাদের মধ্যে ৪৯ জন হাসপাতালে এবং ৫ জন বাড়িতে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ২৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

 

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের ২৩ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪ জন রাজশাহী বিভাগের, ৯ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের, ৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত ১৮ মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু ঘটে। প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই।

২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে; ১২ অগাস্ট পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় মঙ্গলবার (২৫ অগাস্ট) মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৪ হাজার ২৮ জনের মধ্যে ৩ হাজার ২০৮ জনই পুরুষ এবং ৮৭৪ জন নারী।

তাদের মধ্যে ২ হাজার ৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ১২৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫৪৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৫৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৯৬ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৫ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ১ হাজার ৯৬৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৮৯৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৭৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩৩৫ জন খুলনা বিভাগের, ১৫৯ জন বরিশাল বিভাগের, ১৮৬ জন সিলেট বিভাগের, ১৭১ জন রংপুর বিভাগের এবং ৮৯ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

পুরনো খবর