সরকারপ্রধানের হস্তক্ষেপ চেয়ে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মানবিক আবেদন জমা দিয়েছেন ৩২ থেকে ৩৯তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারে ‘নিয়োগ বঞ্চিত’ চিকিৎসকরা।
সেখানে বলা হয়েছে, “বিগত ৩২ থেকে ৩৯তম বিসিএসে সরকারি কর্ম কমিশনের প্রকাশিত বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফলে আমাদের স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়। কিন্তু যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে। সেখানে অনেক প্রার্থী গেজেট থেকে বাদ পড়েন।
“বর্তমানে আমরা ও আমাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের প্রায় সকলেই বেকার। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও চূড়ান্তভাবে নিয়োগ না পাওয়ায় আমরা সামাজিকভাবে প্রতিনিয়ত হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। ফলে আমরা মানসিকভাবে চরম হতাশাগ্রস্ত জীবনযাপন করছি।”
প্রধানমন্ত্রীকে ‘মানবতার সর্বোচ্চ উদাহরণ’ অভিহিত করে আবেদনে বলা হয়, “সমগ্র বিশ্বে আপনার মানবতা প্রশংসিত। সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে আপনি আমাদের দুর্দশাগ্রস্ত পরিবারগুলোর শেষ আশ্রয়স্থল।
“বর্তমান বিশ্ব এক ভয়াবহ মহামারীতে আক্রান্ত। সেই করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় আপনার নেতৃত্ব সারা বিশ্বে প্রশংসিত। এই যুদ্ধে ডাক্তাররা সম্মুখ যোদ্ধা। আমরা স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ডাক্তাররা এই পরিস্থিতিতে দেশের জন্য লড়াই করতে সব সময় প্রস্তুত। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আমাদের যেখানে পদায়ন করা হবে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সচেষ্ট থাকব।”
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় সম্প্রতি দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের (স্বাস্থ্য) অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এই চিকিৎসকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার পরেই চাকরির দাবি নিয়ে এলেন সাম্প্রতিক বিসিএসগুলোতে উত্তীর্ণ কিন্তু নিয়োগ না পাওয়া চিকিৎসকরা।
এখন তারা পিএসসির সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত নিয়োগ পেতে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এই চিকিৎসকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিএসসি সুপারিশ করলেও ৩২ থেকে ৩৯তম বিসিএসের ২৩১ জন চিকিৎসককে এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।”
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বার বার যোগাযোগ করেও এর সুরাহা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা বলেছেন, আমাদের গোয়েন্দা রিপোর্ট নাকি সন্তোষজনক নয়। তবে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো কী, কখনোই তারা বলেন না।”
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পিএসসির সুপারিশের পরেও গোয়েন্দা প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়া, কাগজপত্রে ঝামেলা থাকা, তথ্যগত ভুলভ্রান্তি, মুক্তিযোদ্ধার সনদ দাখিল করতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণে কাউকে কাউকে এখনও নিয়োগ দেওয়া যায়নি।
“তথ্যগত বিভ্রাটসহ অন্যান্য কারণে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকে এখনও নিয়োগ পাননি এমন ৭১ জনকে নিয়োগ দেওয়া যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনা চলছে। আমি সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যে নির্দেশও দিয়েছি।”