কোভিড-১৯ আক্রান্তদের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে: যুক্তরাজ্য

কোভিড-১৯ মহামারীর এই কালে বিশ্ববাসীর জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর দিচ্ছে যুক্তরাজ্যের এক গবেষণার ফলাফল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2020, 07:18 PM
Updated : 4 May 2020, 08:36 PM

গবেষকরা বলছেন, নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অধিকাংশের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

তবে এই অ্যান্টিবডি তাদের ইউমিনিটি দিচ্ছে কি না, কাঙ্ক্ষিত সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আরও অপেক্ষায় থাকতে বলছেন গবেষকরা।

পাঁচ মাস আগে চীনে মানবদেহে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটার পর এখন অবধি বিশ্বে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এতে মারা গেছেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।

যুক্তরাজ্যেই প্রায় দুই লাখ আক্রান্তের মধ্যে ২৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন।

এই রোগের কোনো ওষুধ কিংবা টিকা না থাকায় এখনও সংক্রমণ এড়িয়ে থাকাই বাঁচার একমাত্র পথ। টিকা আবিষ্কারে বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা জোরেশোরে নামলেও তা আসতে আসতে অন্তত ১৮ মাস লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই নৈরাশ্যের মধ্যে মানুষের শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই ভাইরাস ঠেকানোর জন্য তৈরি হবে বলে আশা করছেন অনেকে।

এর মধ্যেই সোমবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের গবেষকদের আবিষ্কারের কথা জানাল।

দেশটির উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জনাথন ভ্যান-টাম বলেছেন, “কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীদের পরীক্ষা করে বেশিরভাগের দেহেই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এটা এখন সাধারণভাবে বলা যায়, অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।”

মানবদেহে বাইরে থেকে কোনো রোগজীবাণু বা ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া ঢুকলে প্রাকৃতিকভাবেই দেহের নিজস্ব প্রতিরাধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এক পর্ায়ে তৈরি হয় অ্যান্টিবডি, যা বাইরে থেকে আসা জীবাণু বা প্যাথজেনের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।

যদি অ্যাডাপটিভ ইমিউন সিসটেম যথেষ্ট শক্তিশালী হয়, তবে কোনো জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য গঠিত অ্যান্টিবডি ওই ভাইরাসকে নিজস্ব স্মৃতিতে সংরক্ষণ করে। ফলে পুনরায় ওই একই ভাইরাসের আক্রমণ হলে অ্যান্টিবডি সহজেই ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে।

এখন প্রশ্ন হল, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের শরীরে গঠিত অ্যান্টিবডি তাকে পরবর্তীতে আক্রান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষা দেবে কি না?

সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জনাথন ভ্যান-টাম বলেন, এই প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর দেওয়ার জন্য তাদের আরও সময় লাগবে।

এই অ্যান্টিবডির কার্যকর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করবে টিকা কীভাবে মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানান, অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য সুইজারল্যান্ডের ওষুধ কোম্পানি রোশের সঙ্গে আলোচনা করছেন তারা।

আক্রান্তদের দেহে অ্যান্টিবডি পেলেই তাকে ‘ইমিউনিটি’ না ভাবার জন্য ইতোমধ্যে সব দেশকে সতর্ক করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।