করোনাভাইরাস শনাক্তে অনুমোদনহীন কিট ব্যবহার করা যাবে না: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

মানবদেহে নতুন করোনাভাইরাস শনাক্তে বাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কিট থাকলেও অনুমোদন ছাড়া তা ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 12:54 PM
Updated : 25 April 2020, 12:54 PM

করোনাভাইরাস শনাক্ত করার জন্য অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন পর্যায়ে আমদানি করা র‌্যাপিড টেস্ট কিটের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার প্রেক্ষাপটে শনিবার এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চীন থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে র‍্যাপিড টেস্ট কিট এনে বিভিন্ন হাসপাতালে বিতরণ হচ্ছিল বেশ আগে থেকেই, যেসব কিট ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদিত ছিল না।

এর মধ্যেই র‌্যাপিড টেস্ট কিটের নির্ভুলতা নিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রশ্ন ওঠে। সম্প্রতি ভারত র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহার বন্ধও করেছে।

এদিকে করোনাভাইরাস শনাক্তে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র শনিবার তাদের উদ্ভাবিত র‌্যাপিড টেস্ট কিটের নমুনা প্রকাশ করে; তারা সরকারকেও তা হস্তান্তর করতে চাইলেও কর্মকর্তাদের কেউ যাননি।

এরপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এর আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান প্রেস ব্রিফিংয়ে অননুমোদিত কিট ব্যবহার না করতে বলেন।

তিনি বলেন, “সরকারের অনুমোদনহীন কোনো কিটস গ্রহণযোগ্য হবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত পদ্ধতি অনুযায়ী ও সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অনুমোদিত কিটস এর মাধ্যমেই কেবল পরীক্ষা করা হচ্ছে। র‌্যাপিড কিটস নিয়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী সরকার কাজ করছে।”

পরে এ বিষয়ে মিডিয়া সেলের সদস্য ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব রীনা পারভীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পিসিআর মেশিনের সঙ্গে যে কিট রয়েছে, কেবল সেসব কিটেই পরীক্ষা করা যাচ্ছে। আলাদাভাবে কোনো টেস্টিং কিট নিয়ে আমাদের পরীক্ষা করা হয়নি। 

“জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকটি মাথায় রেখে আমরা কাউকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতিত অনুমোদন দিতে পারব না।”

করোনাভাইরাস শনাক্তে সরকারি প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর আরটি-পিসিআর বা রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন পদ্ধতি অনুসরণ করে।

এতে নমুনা হিসেবে রোগীর লালা কিংবা শ্লেষ্মা পরীক্ষা করা হয়। নমুনায় করোনাভাইরাস আছে কি না তা বুঝতে ব্যবহার করতে হয় বিশেষ রি-এজেন্ট।

এই পদ্ধতিতে রোগীর নমুনায় করোনাভাইরাসের জিনোম বৈশিষ্ট্যের কোনো জেনেটিক বিন্যাস পাওয়া যায় কি না, তা পরীক্ষা করা হয়।

অন্যদিকে র‌্যাপিড র‌্যাপিড টেস্টে রক্তের নমুনায় অ্যান্টিবডির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পাঁচ থেকে ১০ দিন সময় লাগতে পারে। ফলে, অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার আগে র‌্যাপিড কিটে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ হবে। অর্থাৎ, শরীরে ভাইরাস থাকলেও এই পরীক্ষায় তা ধরা পড়বে না।

আবার কেউ আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠলেও তার রক্তে অ্যান্টিবডি থেকে যাবে। ফলে তার শরীরে ভাইরাস না থাকলেও র‌্যাপিড কিটের টেস্ট ফলাফল পজিটিভ আসবে।