করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের

মানবদেহে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তের সহজ এবং কম খরচের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি করেছে বাংলাদেশি সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2020, 05:26 PM
Updated : 18 March 2020, 05:38 PM

কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এই পদ্ধতিতে ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব।

আড়াই মাস আগে চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নিয়েছে। এতে বাংলাদেশেও ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু ঘটেছে একজনের।

দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে একমাত্র সরকারি সংস্থা আইইডিসিআরের গবেষণাগারে, যেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে আমদানি করা কিট।

জাফরুল্লাহ বলেন, “আমরা যেটা উদ্ভাবন করেছি সেটা কিট নয়, এটা একটা ডাইরেক্ট মেথড, যার মাধ্যমে আমরা যে কোনো মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা শনাক্ত করতে পারব খুব কম সময়ে। খরচ একেবারেই অল্প ।

“মানুষের ব্লাড গ্রুপ যেভাবে পরীক্ষা করে, এটা ওইরকম একটা সহজ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একজন রোগীর শরীর থেকে একটু রক্ত নিয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে দিতে পারব, তার করোনাভাইরাসের সংক্রমন হয়েছে কি, হয়নি।”

তিনি জানান, এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল।

“২০০৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সার্স ভাইরাসের কিট তৈরি করেছিলেন মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক বিজন। ওই সময়ে তিনি সিঙ্গাপুরে কর্মরত ছিলেন। দুই বছর যাবত তিনি গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করছেন।“

কবে নাগাদ এই পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ শুরু হরতে পারবেন- জানতে চাইলে দেশে আমলান্ত্রিক জটিলতা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী (ফাইল ছবি)

তিনি বলেন, “আমি তো ব্যুরোক্রেসির সাথে ফাইট করে বেড়াচ্ছি। এজন্য কতগুলো রি-এজেন্ট ও এন্ডিবডি লাগে, যা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। গত ৭ দিন ধরে আমরা চেষ্টা করছি, এটা-সেটা লাগবে বলে আজকে পর্যন্ত ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের চিঠিটাই পাওয়া যায়নি।

“আজকে ড্রাগ কন্ট্রোলারের সঙ্গে কথা বলছি। তারা বলল, আগামীকাল চিঠিটা দেবেন, তারা কথা দিয়েছেন। দেখা যাক। কালকে না হলে শুক্র-শনি দুই দিন বন্ধ। আরও পিছিয়ে যাবে।”

এবিষয়ে জানিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বুধবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওরা তো আজকেই এপ্লিকেশন করেছেন রেজিস্ট্রেশনের জন্য, যে প্রোডাক্টটি তারা তৈরি করেছে তার জন্য।

“আর রিএজেন্ট আনার যে কথা বলছেন, সেটা তারা আগামীকাল আসবে, তাদের সঙ্গে কথা বলে, দেখে আমরা দিয়ে দেব।”

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, “পৃথিবীর তিনটা দেশে এসব (রিএজেন্ট) তৈরি করে। আমরা ইংল্যান্ড থেকে আনব। আমরা অর্ডার দেওয়ার পরে তারা বানিয়ে পাঠাবে। তাতেও এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যাবে।

“আমরা আশা করছি যে, ড্রাগ অ্যাডমিনস্ট্রেশনের অনুমোদনের চিঠি পেলে অর্ডার দিয়ে ১০ দিনের মধ্যে রিএজেন্ট ও এন্টিবডি পেয়ে যাব এবং পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে আমরা তৈরি করে আমরা সরকারের কাছে জমা দিয়ে দেব করোনাভাইরাস সনাক্তকরণের কাজটি শুরু করার জন্য।

“সরকারের কিট দিয়ে রোগীকে দেখবে, আমারটা দিয়ে দেখবে। ওটা যদি পজিটিভ হয়, আমারটাও হবে।”

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, এই পদ্ধতি গ্রহণের আগে তা পরীক্ষা করে দেখতে দেবে।

“দেখতে হবে যে এটার কোয়ালিটি, সেন্সিবিলিটি। ডাব্লিউএইচও (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা), আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী রেকমন্ড করে, সেটাও আমাদের দেখতে হবে। এগুলো দেখে তবেই আমাদের তা চালু করতে হবে।”

এই সংক্রান্ত খবর