চীনফেরত মানেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত নয়: আইইডিসিআর

কেউ চীন থেকে এলেও তাকে নিয়ে আতঙ্কিত হতে মানা করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2020, 11:02 AM
Updated : 17 Feb 2020, 11:03 AM

চীন নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর দেশটি থেকে আসা বাংলাদেশিদের বিভিন্ন জেলায় হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে সোমবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর একথা জানায়।

দেড় মাস আগে চীনে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর তা বিশ্ববাসীর জন্যও আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। দেড় হাজারের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে, আক্রান্তের সংখ্যাও ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।

চীনের বাইরে দুই ডজনের বেশি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে, এর মধ্যে চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে, সেখানে কয়েকজন বাংলাদেশিও ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।

ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাংলাদেশের অনেকের চীনে যাতায়াতের পাশাপাশি বাংলাদেশি অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন দেশটিতে।

চীনের যে নগরীতে প্রথম ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে, সেখানে থাকা তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার পর দুই সপ্তাহ ঢাকায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।

এর মধ্যেই চীনের অন্যান্য প্রদেশ এবং সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশিদের নিয়ে তাদের এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। তাদের হাসপাতালে যেতে চাপ দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে ফেরা বাংলাদেশিদের নিয়ে মানুষের ভেতরে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে।

“আমরা একটা বিষয় দেখতে পাচ্ছি, ইদানীং সিঙ্গাপুর বা চীন থেকে আসলেই তাকে আইসোলেশন করার একটা প্রেসার আসে মানুষ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কাছ থেকে। কিন্তু চায়না বা সিঙ্গাপুর থেকে আসলেই তো তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না।”

তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুর থেকে বা চীন থেকে আসলেই তাকে হাসপাতালের আইসোলেশনে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

“ঢাকার বাইরের প্রশাসনে যারা আছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেই তার মধ্যে লক্ষণ উপসর্গ আছে কি না, তা দেখেই আমরা তাকে আইসোলেশনে নেব। তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর প্রয়োজন হলে সেই পরামর্শও স্বাস্থ্য বিভাগ দেবে।”

বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানান ডা. ফ্লোরা।

“তার মানে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী নেই। কারও মধ্যে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

কডিভ-১৯ (নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট রোগ) ছড়িয়ে পড়ার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি চীন থেকে ৩১২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। ঢাকার আশকোনার হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন অবস্থানের পর শনিবার তাদের ছাড়পত্র দেয় আইইডিসিআর।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে এখন পর্যন্ত চীন ফেরত কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি।