করোনাভাইরাস: সুরক্ষা উপকরণের সঙ্কট নিয়ে সতর্ক করল ডব্লিউএইচও

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যে গতিতে বাড়ছে, তাতে বিশ্ব ফেইস মাস্ক, গ্লাভস আর প্রোটেকটিভ গাউনের মতো সুরক্ষা উপকরণের বড় ধরনের সঙ্কটের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস।

>>রয়টার্স
Published : 7 Feb 2020, 02:14 PM
Updated : 7 Feb 2020, 02:49 PM

শুক্রবার জেনিভায় সংস্থার নির্বাহী পর্ষদের সভায় তিনি জানান, ডব্লিউএইচও বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে টেস্টিং কিটস, মাস্ক, গ্লাভস, রেসপিরেটর আর গাউন পাঠাচ্ছে।

“কিন্তু বিশ্ব এসব ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণের দীর্ঘমেয়াদী সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে, আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন।”

ডব্লিউএইচও মহা মহাপরিচালক জানান, সরবরাহ ব্যবস্থায় কোথায় কোথায় সমস্যা তৈরি হতে পারে, সে জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান বের করার পাশাপাশি অঞ্চলভেদে এসব উপকরণের সুসম সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন তিনি।

শুক্রবার জেনিভা সময় সকাল ৬টায় (বেইজিং সময় বেলা ১টা) পর্যন্ত  সময়ে চীনে  ৬৩৭ জনের মৃত্যু এবং ৩১ হাজার ২১১ জনের সংক্রমণ এবং চীনের বাইরে আরও একজনের মৃত্যু এবং ২৭০ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা জানান গেব্রিয়েসাস।

তিনি বলেন, “গত দুই দিনে চীনে নতুন রোগীর সংখ্যা কিছু কমেছে। এটা ভালো লক্ষণ। তবে আমি সতর্ক করে বলতে চাই, এ সংখ্যা আবার বাড়তে পারে।”  

পর্যদ সভায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এই বৈঠকে নতুন এ করোনাভাইরাসের জন্য একটি যথাযথ নাম ঠিক করার ওপরও আলোচনা হয়।

সার্স ও মার্সের মত একই পরিবারের সদস্য এ ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণের বিষয়টি নজরে আসে গতবছর ডিসেম্বরের শেষে। চীনের উহান শহরের একটি সি ফুড মার্কেট থেকে ওই ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে বলে সে সময় ধারণা করা হয়। 

প্রথামকিভাবে এ ভাইরাসকে বলা হচ্ছে নভেল, অর্থাৎ নতুন করোনাভাইরাস, সংক্ষেপে ২০১৯-এনসিওভি।

ডব্লিউএইচওর এপিডেমিওলজিস্ট মারিয়া ফ্যান কেরকোহফ বলেন, “নামের সঙ্গে যেন কোনো এলাকার নাম জুড়ে দেওয়া না হয়, সে বিষয়টাতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন যে এখনও অনেক সংবাদমাধ্যম একে চায়না বা উহান ভাইরাস লিখে যাচ্ছে।

“এই ভাইরাসের সঙ্গে কোনো বিদ্বেষ যেন জড়িয়ে না যায়, সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আর সে কারণেই আপাতত ওই নামটি ঠিক করা হয়েছে।”

নভেল করোনাভাইরাস সাধারণ ফ্লুর মত হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়াতে পারে, ছড়াতে পারে মানুষ থেকে মানুষে। সাধারণভাবে বেশিরভাগ রোগী সেরে উঠলেও ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভাইরাস ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাস  দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় গত ৩১ জানুয়ারি বৈশ্বিক সতর্কতা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের চীন থেকে সরিয়ে নিয়ে কোয়ারেন্টিন করে রাখে। তবে পরিস্থিতি এখনও ‘মহামারী’ ঘোষণার পর্যায়ে যায়নি বলে ডব্লিউএইচও।