করোনাভাইরাসের ওষুধ এখনও আসেনি: ডব্লিউএইচও

নভেল করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কার্যকরী ওষুধ নিয়ে চীনা গবেষকদের দাবি উড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি  এর টিকা আবিষ্কার নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের দাবিও নাকচ করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2020, 05:09 PM
Updated : 5 Feb 2020, 05:09 PM

এখন পর্যন্ত এর কোনো বিশেষায়িত চিকিৎসা পদ্ধতি নেই, বলেছে সংস্থাটি। 

ডব্লিউএইচও মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক বলেন, “২০১৯-এনসিওভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এর কোনো বিশেষায়িত চিকিৎসা পদ্ধতি নেই।”

আর যে কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের আগে এর কার্যযকারিতা ও তা কতটুকু নিরাপদ তা নিশ্চিত হতে একের পর এক নিরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব সংস্থাটি।

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এক মাসেই মৃতের সংখ্যা ৪৯০ এ পৌঁছে গেছে। ২৪টি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৪ হাজার ।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

প্রাণ সংহারক এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক বাড়তে থাকার মধ্যে চীনের একটি গণমাধ্যমে খবর এসেছে, ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই রোগের চিকিৎসার ওষুধ পেয়েছেন।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্কাই নিউজে একদল গবেষক দাবি করেন, করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে ‘বিশেষ অগ্রগতি’ পেয়েছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি না হওয়ায় আপাতত নিরাপদ থাকার একমাত্র উপায় হল, যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

আর হাসপাতালে ভর্তি হলে রোগীর মধ্যে যে উপসর্গগুলো আছে, সেগুলো সারাতেই মূলত চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই ভাইরাসকে প্রতিহত করতে চেষ্টা চালাতে থাকে।

নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে সবার নজর ওই বাজারের

সম্প্রতি নটিংহাম ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক জোনাথন বল বিবিসিকে বলেন, যে কোনো টিকার ক্ষেত্রে আগে প্রাণীর শরীরে এর কার্যকর ও নিরাপদ প্রয়োগের প্রমাণ থাকা জরুরি। তারপর মানবদেহে এর পরীক্ষা সফল হলে সেই টিকা লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেলে তবেই সেই টিকা ব্যবহার করা যায়।

নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বানানোর গবেষণা পুরোদমে চললেও তাতে কয়েক বছরও সময়ে লেগে যেতে পারে।

যদি দ্রুততার সাথে টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েও থাকে, তবুও এ বছর জুনের আগের তা মানুষের শরীরে প্রয়োগের উপযোগী হবে না, বলা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

আশকোনার হজ ক্যাম্পের ছাদে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা চীনের উহান থেকে আসা বাংলাদেশি; করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেশে আনার পর তাদের এখানে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি জিলিড বলছে, তাদের প্রতিষ্ঠান চীনে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় রেমডেসিভির ওষুধ প্রয়োগ করে নিরীক্ষা শুরু করেছে। 

তবে এই চিকিৎসা এখনও গবেষণার মধ্যেই আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা বিশ্বের কোথাও এখনও স্বীকৃত নয়।”

তবে জিলিড এই রেমডেসিভির উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে এরমধ্যে।

ভবিষ্যতে নতুন কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কাজে লাগতে পারে ভেবেই এটা করা হচ্ছে জানিয়ে জিলিডের মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, “২০১৯-এনসিওভি সারাতে এই ওষুধ নিরাপদ ও কার্যকর কি না সেটা জানাই আগেই আমরা এটা শুরু করেছিলাম।”