সংস্থাটি বলছে, এতে শিশুদের স্বাস্থ্য যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ডব্লিউএইচও’র সুপারিশ করা রোজ এক ঘন্টার ব্যায়াম করতেই ব্যর্থ হচ্ছে ধনী ও গরিব সব দেশের শিশুরাই।
সমীক্ষা চালানো ১৪৬টি দেশের শিশুদের মধ্যে দেখা গেছে, মাত্র চারটি দেশ ছাড়া আর সব দেশেই মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশুরা বেশি সক্রিয়।
বিবিসি জানায়, শারীরিক চর্চার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও ওইসব কাজ বিবেচনায় নিয়েছে যার মধ্য দিয়ে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয় এবং দেহ যথেষ্ট অক্সিজেন পেতে পারে। যেমন, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতরানো, ফুটবল খেলা, লাফানো জিমন্যাস্টিক প্রভৃতি।
ডব্লিউএইচও’র লক্ষ্য ছিল, দিনে ৬০ মিনিট মাঝারি থেকে কঠিন ব্যায়াম। সংস্থার ডা. ফিওনা বুল বলছেন, আমি মনে করি না এটি অসম্ভব কোনো টার্গেট।
প্রমাণ আছে যে, এতে করে শারীরিক ও মস্তিষ্কর উন্নয়ন ঘটে। মাঝারি ও কঠিন ব্যায়ামের পার্থক্য হচ্ছে, মাঝারি ব্যায়ামের সময় অন্য কাজ কিংবা কথা চালানো যায়, কিন্তু কঠিন ব্যায়ামের সময় তা সম্ভব না।
শারীরিক অনুশীলন কেন দরকার?
পর্যাপ্ত শারীরিক অনুশীলন না করলে শিশুদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে নানা সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকিটিই স্বাস্থ্যের। কিশোর বয়সে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে তা পরবর্তী জীবনে সুস্বাস্থ্য গঠনে সহায়ক হয়। সক্রিয় বলতে, সুস্থ হৃৎপিণ্ড, সুস্থ ফুসফুস, শক্ত হাড় ও পেশি, উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য ও কম ওজন থাকা বোঝায়।
তাছাড়া, গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রেও অনুশীলনের ভূমিকা আছে। গুথোল্ড বলেন, অল্প বয়সে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা শিশুদের শেখার ক্ষমতা, সামাজিক দক্ষতা অর্জন অন্যান্যদের তুলনায় ভাল হয়।
শিশুদের অনুশীলন বিমুখতার কারণ কি?
এ প্রশ্নের কোনো একক উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। তবে বিশ্বজুড়ে শিশুদের অনুশীলন বিমুখতার পেছনে সাধারণ কতকগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার চাপ।
ডব্লিউএইচও’র গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক লিয়ানে রাইলি বলেন, ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের পরীক্ষার জন্য প্রচুর পড়াশোনার চাপ থাকে। তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কখনো কখনো অনেকক্ষণ ধরে তাদের স্কুলে বসিয়ে রেখে ‘হোমওয়ার্ক’ করানো হয়।
তারা শারীরিক অনুশীলন করার সুযোগই পাচ্ছে না। এছাড়া, নিরাপদভাবে খেলা এবং অবসর সময় কাটানোর ভাল ব্যবস্থা না থাকার কারণেও শিশুদের শারীরিক অনুশীলন বিমুখতার জন্য দায়ী। যেমন: রাস্তাঘাট ভাল না হলে সেখানে সাইকেল চালানো, হেঁটে স্কুল বা বন্ধু-বান্ধবের বাসায় যাওয়াও নিরাপদ না। এগুলো একটি বড় ব্যাপার।
তাছাড়া,ফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারে ডিজিটাল খেলার চল বেড়ে যাওয়ায় বাইরে শিশুদের দৌড়ঝাঁপ করে খেলার প্রবণতা কমে গেছে।