দেশে ৬ লাখের প্রয়োজন ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’

বাংলাদেশের প্রায় ৬ লাখ বয়স্ক মানুষ এবং ৩৯ হাজার শিশুর প্যালিয়েটিভ কেয়ার দরকার রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকমেহেরুন নাহার মেঘলাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2019, 07:00 AM
Updated : 12 Oct 2019, 09:27 AM

নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের সেবার বিষয়ে প্রচারণা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটাতে শনিবার বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব হসপিস অ্যান্ড প্যালিয়েটিভ কেয়ার দিবস’।

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর  সার্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা (ইউনভার্সাল হেলথ কাভারেজ) নিয়ে দৃঢ় অবস্থানের প্রতি সম্মান জানিয়ে   জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে প্রশমন সেবাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলে বাংলাদেশে দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমার যত্ন,আমার অধিকার’।

বিশ্বজুড়ে নিরাময় অযোগ্য মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ ও তাদের ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এক হয়ে প্রতি অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শনিবার এই দিনটি পালন করে।

প্যালিয়েটিভ কেয়ার সম্পর্কে প্রচারণা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটানোই এই দিবস পালন করছে বাংলাদেশও।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মেডিকেল অফিসার ডা. রুবাইয়াৎ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্যালিয়েটিভ কেয়ার (প্রশমন সেবা) নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিতকারী রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি ও তার পরিবারের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক প্রয়োজন নিরূপণ ও সমাধানের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা।

“নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগ যেমন ক্যান্সার, এইডস, কিংবা প্রান্তিক পর্যায়ের হার্ট ফেইলিউর, কিডনি অথবা ফুসসুসের রোগ, স্ট্রোক, স্মৃতিভ্রষ্টতা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত মানুষ এবং তাদের পরিবার এই সেবা ব্যবস্থায় উপকৃত হতে পারেন।”

তিনি জানান, বাংলাদেশে বছরের যে কোনো সময় প্রায় ৬ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এবং ৩৯ হাজার শিশুর প্রশমন সেবার প্রয়োজন। ইকোনমিস্ট জার্নালের তথ্য অনুযায়ী প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রাপ্যতার বিচারে পৃথিবীর ৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৯তম।

প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশের আজীবন সদস্য অভিনেত্রী শারমিন লাকী বলেন, গণমাধ্যমের আরও মনোযোগ এই সেবা সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়বে।

বিএিএমএমইউর সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড.নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) উল্লিখিত সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিধি (ইউএইচসি) অর্জনের অন্যতম প্রধান অংশ এই প্যালিয়েটিভ কেয়ার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আগ্রহ লক্ষ্য করেছি এ বিষয়ে। আশা করি রাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে দ্রুত ভূমিকা রাখবে।”

তিনি জানান, বিএসএমএমইউতে সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ার ২০০৮ সাল থেকে সেবা দিয়ে আসছে। বহিঃবিভাগ, অন্তঃবিভাগ, দিবা সেবা, লিম্ফিডিমা কেয়ার, রেজিস্টার্ড রোগীদের জন্য ২৪ ঘণ্টা টেলিফোন সার্ভিস, হোম কেয়ার সেবা ছাড়াও কড়াইল এবং নারায়ণগঞ্জে কমিউনিটি লেভেলে জনসাধারণের মাঝে এই সেবা প্রদান করে আসছে এই সেন্টার।