কয়েক সপ্তাহ আগে অগাস্ট মাসের মাঝামাঝিতে কোরবানির ঈদের সময় সিরাতুলের মৃত্যু হলেও তা এতদিন প্রকাশ পায়নি।
একটি নিউজ পোর্টালে বিষয়টি প্রকাশের পর জানতে চাইলে রোববার বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সফলভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্টের পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছিলেন তিনি (সিরাতুল)।
“কিন্তু বাড়িতে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। একেবারে শেষ পর্যায়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন।”
লিভার সিরোসিতে আক্রান্ত ২০ বছর বয়সী সিরাতুলের যকৃৎ প্রতিস্থাপনে গত জুন মাসের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে (বিএসএমএমইউ) অস্ত্রোপচার হয়েছিল।
বিএসএমএমইউতে সেটাই ছিল প্রথম যকৃৎ প্রতিস্থাপন, ১৮ ঘণ্টার ওই অস্ত্রোপচারে সহযোগিতা করেছিল ভারতের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ডা. বালাচন্দ্র মেননসহ তার চিকিৎসক দল।
সন্তানকে সারিয়ে তুলতে সিরাতুলের মা রোকসানা বেগম তার যকৃতের অংশ দিয়েছিলেন, যা সফলভাবে সংযোজনের দাবি করেছিলেন চিকিৎসকরা।
এবার বর্ষার শুরুতে জুন মাসেই বাংলাদেশে এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। জুলাই ও অগাস্টে তা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু অগাস্টেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
ডেঙ্গুতে দুইশর মতো মৃত্যুর খবর বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে এলেও সরকারিভাবে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু সন্দেহে ১৯২টি মৃত্যুর তথ্য আসে। তার মধ্য থেকে ৯৬টি পর্যালোচনা করে ৫৭টি মৃত্যু ডেঙ্গুতে বলে নিশ্চিত করেছে তারা।
এতদিন প্রকাশ না পেলেও সিরাতুলের মৃত্যুর খবর চেপে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক কনক বড়ুয়া।
“এখানে লুকোছাপার কিছু নেই। যখন কেউ আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে, আমরা বলেছি যে ডেঙ্গুতে তার (সিরাতুল) মৃত্যু হয়েছে। তিনি শেষ পর্যায়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন, আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি,” বলেন এই চিকিৎসক।