বিবিসি জানায়, গতবছর একই সময়ের তুলনায় এবছর ফিলিপিন্সে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৯৮ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে ‘ডেঙ্গু মহামারি’ ঘোষণা করেছে সরকার।
কোন কোন অঞ্চলে দ্রুত জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন তা সনাক্ত করতে ‘ডেঙ্গু মহামারি’ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এইডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক দশকে বিশ্বজুড়ে মশাবাহী রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক বেড়েছে।
মঙ্গলবার দেশজুড়ে ডেঙ্গু মহামারি ঘোষণার আগে গত জুলাইয়ে ফিলিপিন্স সরকার প্রাথমিকভাবে দেশজুড়ে ‘ডেঙ্গু সতর্কতা’ জারি করেছিল।
দেশটির ওয়েস্টার্ন ভিসেয়াস অঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। সেখানে এখন পর্যন্ত ২৩ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়া, কালাবারজোন, জামবোয়ানগা পেনিনসুলা ও নর্দান মিন্দানাওতেও ডেঙ্গু মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাঁচতে ২০১৬ সালে ফিলিপিন্সের আট লাখ স্কুল পড়ুয়া শিশুকে ডেঙ্গুর টিকা দেওয়া হয়েছিল।
ফরাসি ওষুধ কোম্পানি সানোফি বিশ্বে প্রথম ডেঙ্গু জ্বরের টিকা ‘ডেংভ্যাক্সিয়া’ তৈরি করে। দুই দশক ধরে ডেঙ্গু জ্বরের টিকার উন্নয়নে কাজ করছে বলেও জানিয়েছিল তারা।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মেক্সিকোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথম দেশটিতে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ডেংভ্যাক্সিয়া’ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। পরে ফিলিপিন্সও তাদের পথ অনুসরণ করে।
কিন্তু ২০১৭ সালের নভেম্বরে সানোফি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে ডেংভ্যাক্সিয়া গ্রহণের ফলে যারা কখনোই ভেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হননি তাদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে বলে জানায়। ওই মাসেই ফিলিপিন্স ডেঙ্গুর টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু ততদিনে ডেঙ্গু টিকা নেওয়ায় অন্তত ১৪টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। ওই শিশুদের মৃত্যুর পেছনে আসলেই ডেংভ্যাক্সিয়া সরাসরি যুক্ত কিনা তা তদন্ত করে দেখতে সেখানে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ৪০ লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাদের বেশিরভাগই ক্রান্তীয় বা উপ-ক্রান্তীয় দেশগুলোর বাসিন্দা।