নবজাতকের মৃত্যু: স্বাস্থ্যের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব পরিবার পরিকল্পনার

মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কাজে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2018, 12:10 PM
Updated : 25 April 2018, 07:58 PM

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “যে কোনো প্রতিষ্ঠানে, এমনকি আপনার নিজের প্রতিষ্ঠানেও যদি দেখেন, সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে।

“প্রতিষ্ঠান যদি বড় হয় সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এই দুর্বলতা দেখা দেয়। এটা অস্বীকার করব না, দুই অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের কিছুটা অভাব আছে।”

‘খুব বেশি ঘাটতি নাই’ মন্তব্য করলেও পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগের যে সাফল্য, তা স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের যৌথ প্রয়াসে সম্ভব হয়েছে। আমি মনে করি, যদি আমাদের কোনো সমন্বয়ের ঘাটতি থাকে, সেটা দূর করা সম্ভব।”

ইউনিসেফের সহযোগিতায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আয়োজনে ‘প্রতিটি নবজাতককে বাঁচাতে হবে’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তাদের এ বক্তব্য আসে।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী দুজনের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন: “দুই মহাপরিচালকের জন্য আমার একই প্রশ্ন। অভিযোগ হচ্ছে, আপনাদের দুই অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।”

সমন্বয়ের অভাবের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ওনার (পরিবার-পরিকল্পনার মহাপরিচালক) কিছু সুযোগ সুবিধা আছে, ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তার লোকজন বাড়িতে যেতে পারে, আপনাদের কিছু সুযোগ-সুবিধা আছে, হাসপাতালগুলো আপনাদের নিয়ন্ত্রণে। আপনাদের দুই অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের যে অভাব, কী জবাব দেবেন?”

 

দুই অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন দুই মহাপরিচালকই।

অধ্যাপক আজাদ বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি। গ্রাম পর্যায়ে আমাদেরও স্বাস্থ্যকর্মী আছে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরেরও স্বাস্থ্যকর্মী আছে। উভয় অধিদপ্তরে আমরা কেন্দ্র থেকে শুরু করে প্রান্তিক পর্যন্ত এক সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার চেষ্টা করি।”

তিনি বলেন, “আমার কমিউনিটি ক্লিনিকে অবশ্যই সিজারিয়ান সেকশন হবে না। তবে অনেক ক্লিনিকে হয়ত আমরা ডেলিভারি করতে পারব, এই কথা বলতে পারি, আমাদের যে কোনো কেন্দ্রে বা যে কোনো স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে যে যদি কোন মা আসে, আমরা তাহলে দায়িত্ব নেব।

“যেখানে তাকে রেফার করা সম্ভব হয়, তার দায়িত্ব আমরা নেব। কেউ যদি আমাদের কাছে সেবার জন্য আছে আমরা অবশ্যই সেবার দায়িত্ব নেব।”

মোস্তফা সারোয়ার বলেন, “কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা যদি মাঠ পর্যায়ে কোথাও যায়, আমাদের কর্মীরা তাদের সাহায্য করছে, ডেলিভারি কর্মীরা এক সঙ্গে কাজ করছে।”

এরপর তাদের দুজনের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, সমন্বয়ের ঘাটতি মেটানোর জন্য দুই পরিচালক একসঙ্গে বসেন কি না?

উত্তরে পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক বলেন, “মাঝে-মধ্যে মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে আমরা একসঙ্গে হই। বিভিন্ন অসঙ্গতি আছে সেগুলো দূর করার আলোচনা আমরা করি।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “আমাদের দুই অধিদপ্তরের স্বতন্ত্র বিভাগ আছে, শুধু এই বিষয়টি নিয়ে। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য। দুই বিভাগই একত্রে কাজ করে।”

সমন্বয়ের ঘাটতি মেটাতে দুই মহাপরিচালকের স্বাক্ষরে অনেক সার্কুলার জারি করা হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।