শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক তদন্ত প্রতিবেদনে এ খবর দেওয়া হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ফরাসি ওষুধ কোম্পানি সানোফি বিশ্বে প্রথম ডেঙ্গু জ্বরের টিকা ‘ডেংভ্যাক্সিয়া’ তৈরি করে। দুই দশক ধরে ডেঙ্গু জ্বরের টিকার উন্নয়নে কাজ করছে বলেও জানিয়েছিল তারা।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে মেক্সিকোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রথম দেশটিতে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ডেংভ্যাক্সিয়া’ ব্যবহারের অনুমতি দেয়।
ফিলিপিন্সে ২০১৬ সালে আট লাখ স্কুল পড়ুয়া শিশুকে ডেঙ্গুর টিকা দেওয়া হয়।
কোম্পানির পক্ষ থেকে ইমেইলে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “যেসব পরিবার তাদের সন্তান হারিয়েছে তাদের জন্য আমাদের সমবেদনা রইল। সানোফি কর্তৃপক্ষ এই টিকার মাধ্যমে ফিলিপিন্সসহ বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষের কষ্ট কমাতে বা শেষ করতে চেয়েছিল।”
সানোফির এ ঘোষণার পর ফিলিপিন্সে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়।
নভেম্বরেই ফিলিপিন্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গুর টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ১০ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে।
ওই কমিটিকে দেশটিতে ডেঙ্গুর টিকা গ্রহণের পর মারা যাওয়া ১৪ শিশুর মৃত্যুর পেছনে ডেংভ্যাক্সিয়া সরাসরি যুক্ত কিনা তা তদন্ত করে দেখতে বলা হয়।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে করে বিশেষজ্ঞ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে তিনটির শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে ডেঙ্গু টিকা গ্রহণের সরাসরি সম্পর্ক পাওয়ার কথা বলা হয়।
যদিও শনিবার সানোফির পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউপি-পিজিএইচ এর অনুসন্ধানে ফিলিপিন্সে মারা যাওয়া ১৪ শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে ডেংভ্যাক্সিয়ার সরাসরি সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সংক্রমক ব্যাধি।
বিশ্বে প্রতিবছর ১০ কোটির বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং আক্রান্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে। তাদের মধ্যে ২০ হাজার মানুষ মারা যায়, যাদের অধিকাংশই শিশু।
বিশ্বে প্রতিবছর যত মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার চাইতে ফিলিপিন্সে এ কারণে মৃত্যুর হার ৬০ গুণ বেশি। দেশটিতে প্রতিবছর দুই লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে ভোগে।