নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব খালেদ হোসাইন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই পণ্যগুলো বাজেয়াপ্ত করতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
“এগুলো সরিয়ে ফেলতে ইমপোর্টারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ সম্পর্কে কাস্টমসকেও জানানো হয়েছে।”
বিশ্বে ডেইরি পণ্যের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি ল্যাকট্যালিসের কারখানায় ওই ব্যাকটেরিয়া পাওয়ার পর ৮৩টি দেশ থেকে তাদের এক কোটির বেশি শিশুর গুঁড়ো দুধের বক্স প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ল্যাকটালিসের প্রধান নির্বাহী ইমানুয়েল বেসনিয়েও রোববার শিশুদের জন্য তৈরি ওই সব গুঁড়া দুধ থেকে বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউরোপ, ল্যাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বাজারে ওই সব গুঁড়ো দুধ রয়েছে এবং এই সব দেশকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে বলে কোম্পানির একজন মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে বেবিকেয়ার ১ ও বেবিকেয়ার ২ এই কোম্পানির গুঁড়ো দুধ জানিয়ে সেগুলোতে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কথা উল্লেখ করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর।
আমদানিকারক, বিক্রেতা, শিশু বিশেষজ্ঞ ও অভিভাবকদের এসব দুধ বিক্রি ও ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জেস ইন্টারন্যাশনালকে ওই সব শিশুখাদ্য জরুরি ভিত্তিতে বাজার থেকে তুলে নিতে বলেছে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর।
সালমোনিলা ব্যাক্টেরিয়া আক্রান্ত হলে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি ও তীব্র পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এর প্রভাবে শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর ডিসেম্বরে প্রথম ল্যাকটালিসের একটি কারখানায় সালমোনিলা ব্যাক্টেরিয়া ধরা পড়ে।
এই গুঁড়ো দুধ খাওয়ানোর পর ফ্রান্সে ৩৫ শিশু এবং স্পেনে এক শিশুর অসুস্থ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গ্রিসেও সম্ভাব্য একটি ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে বলে শুক্রবার ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ল্যাকটিসের প্রধান নির্বাহী ফরাসি পত্রিকা জার্নাল ডু ডিমাচকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কারখানায় ব্যাক্টেরিয়া ধরা পড়ার বিষয়টি লুকানোর চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
“এ বিষয়ে অভিযোগ আছে। এবং তা নিয়ে তদন্ত হবে, যাতে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
এই দুধ খেয়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ওই পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
শিশুর গুঁড়ো দুধসহ ডেইরি পণ্যের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর অন্যতম ল্যাকটালিসের বছরে বিক্রি হয় ২১ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের ৪৭টি দেশে ২৪৬টি কারখানা রয়েছে তাদের।
কোম্পানিটি বলছে, ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাদের সেলিয়া কারখানায় সংস্কার কাজের সময় এই সংক্রমণ ঘটেছে বলে তারা ধারণা করছেন।
ওই কারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্যের উপর অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের কৃষিমন্ত্রী।