নারী মাদকাসক্তদের ‘অর্ধেকের বেশি’ ইয়াবা সেবনে

মাদকাসক্ত নারীদের অর্ধেকের বেশি ইয়াবায় আসক্ত বলে এক জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ঢাকা আহছানিয়া মিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2017, 08:40 AM
Updated : 10 Oct 2017, 08:40 AM

মিশনের ‘নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে’ চিকিৎসা নেওয়া ৯৫ জন মাদকাসক্ত নারীর ওপর চালানো জরিপের ফল থেকে তারা বলছে, নারী মাদকাসক্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৬ শতাংশ ইয়াবা সেবনকারী।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী আমির হোসেন এসব তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি জানান, মাদক হিসেবে ঘুমের ওষুধ নিয়ে থাকে ৩৩ শতাংশ নারী, সিগারেট ৩২ শতাংশ, মদ ২৮ শতাংশ, গাঁজা ২৬ শতাংশ, ফেনসিডিল ৯ শতাংশ, হেরোইন ৫ শতাংশ, পেথেড্রিন ৩ শতাংশ এবং ১ শতাংশ নারী ড্যান্ডি নিয়ে থাকে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের কাযালয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী আমির হোসেন ওইসব তথ্য জানিয়েছেন।

২০১৪ সালের ১২ এপ্রিল ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ‘নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’ যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৫০ জন মাদকাসক্ত নারীকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির হেলথ সেক্টরের প্রধান ইকবাল মাসুদ।

ওই পুনর্বাসন কেন্দ্র গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া ৯৫ জন নারীর উপর জরিপটি করা হয় বলে জানান চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী আমির হোসেন।

তিনি বলেন, “মাদক নিয়ে পুরুষদের বিষয়গুলো আগে আসলেও নারী ও শিশুদের মধ্যে এর যে ভয়াবহতা রয়েছে, তা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”

জরিপে তথ্য তুলে ধরে আমির বলেন, জপিরে অংশ নেওয়া ৯৫ জনের পরিবারের মধ্যে ১৬ শতাংশের স্বামী, ১৬ শতাংশের ভাই, ৪ শতাংশের বোন, ৪ শতাংশের বাবা ও ২ শতাংশের মা মাদকাসক্ত ছিলেন।

জরিপে বলা হয়, ৩৪ শতাংশ নারীর একাধিক যৌন সঙ্গী আছে এবং ৪৪ শতাংশের অনিরাপদ যৌন অভিজ্ঞতা আছে। তাদের ১১ শতাংশ মাদক সংক্রান্ত মামলায় জড়িত।

মাদক আসক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে কৌতুহল, বন্ধুদের চাপ, মানসিক বিষাদগ্রস্থতা, পারিবারিক কলহ, বাবা-মায়ের মাদকাসক্তি এবং মাদকের সহজলভ্যতাকে দায়ী করছেন আমির হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের চিকিৎসক ইশরাত শারমীন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী, আহছানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সেলর শারমিন আবেদীন ইরা উপস্থিত ছিলেন।