করোনারি স্টেন্টের দাম নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ

কার্ডিয়াক সার্জারিতে ব্যবহৃত করোনারি স্টেন্টের (রিং) দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ১৭ সদস্যের একটি কমিটি করেছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2017, 02:18 PM
Updated : 18 April 2017, 02:18 PM

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ওই কমিটির সদস্যরা ইতোমধ্যে আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক করে জানতে পেরেছেন, বাংলাদেশের বাজারে করোনারি স্টেন্টের দাম সহজেই অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব।   

ভারত সরকার সম্প্রতি স্টেন্টকে ‘অতি জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে এর দাম ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনার পর বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এ উদ্যোগে নেওয়া হল। 

ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক বলেন, “আমরাও এটা করব। তবে আমাদের কিছুটা সময় লাগবে, কারণ এ বিষয়ে আমরা পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাপানের ওপর নির্ভরশীল। আমরা দ্রুত কোনো কঠোর পদক্ষেপে যেতে পারছি না।”

ভারতে স্টেন্ট উৎপাদন হয় বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা দুই মাসের মধ্যে দাম ঠিক করতে পারব।”

মহাপরিচালক জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ২১টি কোম্পানি বছরে ১৮ হাজারের মত স্টেন্ট আমদানি করে। কিন্তু কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এবং আমদানিকারকরা নিয়ম অনুযায়ী মোড়কের গায়ে দাম উল্লেখ না করায় বাংলাদেশে আমদানি মূল্যের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয়গুণ বেশি দাম রাখা হয়। 

জরুরি এই চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও ভ্যাট দিতে হয় না। আর সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বিক্রেতারা তাদের কেনা দামের সর্বোচ্চ ১.৫৫ শতাংশ বেশি টাকায় গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারেন।

মহাপরিচালক জানান, স্টেন্টের দাম নিয়ন্ত্রণে গঠিত ১৭ সদস্যের কমিটিতে বিশেষজ্ঞ, সরকারি কর্মকর্তা, কাস্টমস কমিশনার, এনবিআরের প্রতিনিধিরা যেমন আছেন, তেমনি আমদানিকারক ও ওষুধ শিল্প খাতের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।  

“প্রাথমিকভাবে আমরা আমদানিকারকদের সঙ্গে বসেছি এবং তাদের দাম পর্যালোচনা করতে বলেছি। চারটি কোম্পানি ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকায় স্টেন্ট বিক্রি করতে রাজি হয়েছে। আমরা একটি দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের ওই দামেই বিক্রি করতে বলেছি।” 

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দাম নির্ধারণ হয়ে গেলে স্টেন্টের মোড়কে দাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করা হবে।

“আমরা তাড়াহুড়া করছি না, কারণ আমদানিকারকরা রোগীদের জিম্মি করার সুযোগ নিতে পারে। তবে আমরা সাধ্যের মধ্যে মানসম্মত স্টেন্ট বিক্রির ব্যবস্থা করতে দাম নিয়ন্ত্রণ করব।”

বাংলাদেশে যেসব চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানি করতে হয়, তার একটি তালিকা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। সেসব সরঞ্জাম যাতে একটি নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় তা নিশ্চিত করার উদ্যোগে নেওয়া হবে।