‘ভারতীয় সিনেমা ঢুকতে দেওয়া হবে না’

দুই বছর পর হতে যাচ্ছে চলচ্চিত্র পরিবেশক ও প্রযোজক সমিতির নির্বাচন। প্রযোজক-পরিবেশকদের দ্বন্দ্ব, প্যানেল সদস্যদের মধ্যে মতভেদ, সদস্যপদ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলায় বারবার পিছিয়ে যাওয়া নির্বাচনটি ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।

জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2014, 09:18 AM
Updated : 23 August 2014, 03:21 PM

নির্বাচনে লড়ছে খোরশেদ আলম খসরু-সামসুল আলম এবং কে এম আর মঞ্জুর-কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপুর প্যানেল। দুই প্যানেলেই ২১ জন সদস্য নির্বাচনে অংশ নেবেন। সমিতির পূর্ণ সহযোগী সদস্য হিসেবে ৩৫ জন এবং সাধারণ সদস্য হিসেবে ১১৩ জন সদস্য ভোট দেবেন এ নির্বাচনে।

ইতোমধ্যে দুটি প্যানেলই তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। খসরু-আলম এবং মঞ্জুর-লিপু, দুই প্যানেলই তাদের ইশতেহারে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি ও পাইরেসি বন্ধের বিরুদ্ধে একাট্টা হবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

মঞ্জুর-লিপু প্যানেলের সহযোগী সদস্য মধুমিতা ফিল্মসের কর্ণধার মোহাম্মদ ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির অভিযোগ এসেছে একাধিকবার। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির একাংশ বারবার তার বিরুদ্ধে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির ‘গোপন আঁতাত’ করার অভিযোগ তুলেছে।

ইশতেহার ঘোষণার দিন খোরশেদ আলম খসরু বলেন,“আমরা নির্বাচিত হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির হোতাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। কোনোভাবেই এ দেশের হলে ভিনদেশী তথা ভারতীয় সিনেমা প্রদর্শিত হতে দেব না। মঞ্জুরের প্যানেল সদস্যরা ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানির যতই পায়তারা করুক, সফল হবে না।”

অবশ্য এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন কে এম আর মঞ্জুর। তার প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণার আগে তিনি বললেন, “আমাদের প্যানেলের কারও মাথা খারাপ হয়ে যায়নি যে, দেশীয় চলচ্চিত্র ধ্বংস করে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি করে তা প্রদর্শন করবে। এ ব্যাপারে হুঁশিয়ার আমরা। আমাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্যি না।”

এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক শাকিব খান। ‘হিরো-দ্য সুপারস্টার’ সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজকদের খাতায় নাম লেখানো শাকিব নির্বাচন করবেন খসরু-আলম প্যানেল থেকে। তিনিও পাইরেসি চিরতরে ‘নির্মূল’ করার অঙ্গীকার করেন।

শাকিব গ্লিটজকে বলেন, “বড় বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তির পরপরই তা পাইরেসির কবলে পড়ে। বিশেষ টাস্কফোর্স, আইন কিছুতেই পাইরেটদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা যাচ্ছে না। তবে আমরা কিন্তু বসে থাকব না। আমাদের প্যানেল নির্বাচিত হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব।”

জাজ মাল্টিমিডিয়ার দাবি পাইরেসি বন্ধে একটি বিশেষ সফটওয়্যার বানিয়েছে তারা। জাজ মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মঞ্জুর-লিপু পরিষদ থেকে নির্বাচন করছেন।

দু্‌ই প্যানেলের নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি সময়োপযোগী সেন্সর নীতিমালা প্রণয়ন। মঞ্জুর-লিপু প্যানেলের সদস্য চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা বলেন, “সেন্সর নীতিমালা সময়োপযোগী নয়। সমিতির তরফ থেকে একটি শক্তিশালী সেন্সর নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। যে দলই নির্বাচিত হোক, তাদের পক্ষ থেকে এক বা একাধিক সদস্য সেন্সর বোর্ডের নিরীক্ষণ কমিটিতে থাকবে।”

৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাকরাইলে হতে যাওয়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ঢাকা)-কে নির্বাচন করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন বোর্ডের সদস্য দুজন হচ্ছেন আবু মোতালেব (পরিচালক এফবিসিসিআই) এবং তারিক হাসান (সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক কার্যালয়)।

ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি ও তানজিল আহমেদ জনি।