চলে গেলেন বেলাল আহমেদ

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবীণ পরিচালক বেলাল আহমেদ আর নেই। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে সোমবার সকালে মারা যান তিনি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর।  

জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2014, 10:21 AM
Updated : 18 August 2014, 06:22 PM

গ্লিটজকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক আহমেদ ইলিয়াস ভূইয়া।

ইলিয়াস ভূইয়া গ্লিটজকে জানান, বেশ কদিন ধরেই বেলাল আহমেদ অসুস্থ বোধ করছিলেন বলে তাদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু ‘কাজপাগল’ মানুষটি তার স্বপ্নের চলচ্চিত্র ‘তবুও ভালোবাসব’-এর শুটিং চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় তাকে সোমবার সকালে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে সকাল সাড়ে দশটার দিকে মারা যান তিনি।

সোমবার বাদ আসর জানাজা শেষে বেলাল আহমেদকে বনানী কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে।  

তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে।

চলচ্চিত্র প্রযোজক কে এম আর মঞ্জুর গ্লিটজকে বলেন, “বেলাল আহমেদের মতো মেধাবী পরিচালককে হারানো চলচ্চিত্র পরিবারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। আমরা যখন একটা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছি, তখন এই স্বপ্নবাজ মানুষকে হারিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়লাম।”

‘তবুও ভালোবাসব’-র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্মের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের পরিচালক ইবনে হাসান খান বলেন, “বেলাল আহমেদ পরিচালক পরিচয়ের আগে আমার কাছে ছিলেন ভীষণ ভালো মনের মানুষ। চলচ্চিত্র যখন নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, এই ভালো মানুষগুলো পাশে না থাকলে আমরা কিভাবে এগুবো।”

বেলাল আহমেদ সম্প্রতি ‘অনিশ্চিত যাত্রা’ সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। এ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল আনিসুর রহমান মিলনের। মিলন সময় দিতে না পারায় তার জায়গায় কাজ করেন আজাদ আবুল কালাম। এ বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন মিলন।

“আমার প্রথম চলচ্চিত্র ‘হাজার বছর ধরে’র সেটে ঘনিষ্ঠতা হয় বেলাল আহমেদের সঙ্গে। তিনি এ সিনেমার সহ-পরিচালক ছিলেন। আমাকে নায়ক করে সিনেমা নির্মাণের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আমি শিডিউলের জটিলতায় তার সিনেমাতে অভিনয় করতে পারিনি। আমি অনেকবার ক্ষমা চেয়েছিলাম। বেলাল ভাই আমাকে মাফ করে দিয়েছেন বলেছিলেন। কিন্তু আমি জানি আমার উপর বেশ রেগে আছেন তিনি। অভিমানী মানুষটি ক্ষিপ্ত ছিলেন আমার উপর। বেলাল ভাই অভিমান নিয়েই চলে গেলেন।”

১৯৫০ সালের ২৪ নভেম্বর  ঢাকার হাতিরপুলে জন্মগ্রহণ করেন বেলাল আহমেদ। বেশকটি প্রামাণ্যচিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন তিনি। তার অভিনীত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘বন্ধন’। রেডিও পাকিস্তান এবং ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রচারিত নাটকে কণ্ঠ দিয়েছেন।
১৯৬৭ সালে পরিচালক নজরুল ইসলামের সঙ্গে ‘স্বরলিপি’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন বেলাল। ১৯৭৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘নাগরদোলা’ তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা । তিনি তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মোট আটটি চলচ্চিত্র নির্মান করেছেন। তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নয়নের আলো ’, ‘ঘর আমার ঘর’, ‘আমানত ’,  ‘বন্ধন’, ‘গঙ্গা যমুনা’ , ‘সাক্ষী প্রমান’, ‘ক্রিমিনাল’, ‘ নন্দিত নরকে’। ফেরদৌস ও সুমনা সুমা অভিনীত ‘নন্দিত নরকে’ মুক্তি পায় ২০০৬ সালে।