মেঘলা দিনে অর্ণব আর বন্ধুদের গান

আকাশে মেঘের ঘনঘটা। যে কোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে তুমুল বর্ষণ। এর মধ্যেই জাতীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে শুরু হল অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডসের ‘কান পেতে রই’ শীর্ষক কনসার্ট।

চিন্তামন ‍তুষারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2014, 10:36 AM
Updated : 22 June 2014, 10:48 AM

ব্যান্ডের সায়ান চৌধুরী অর্ণব, পান্থ কানাই, বুনো, মোহাম্মদ শোয়েব, সাদ একে একে পরিবেশন করলেন ২৭টি গান।

শনিবারের মেঘলা বিকেলে মিলতানয়তনের সাদামাটা মঞ্চের ডানদিকে বসলেন রিদমিস্ট বুনো, বামে উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পী মোহম্মদ শোয়েব যার কারণেই উচ্চাঙ্গসংগীতের ক্ষেত্রে বিচরণ শুরু করেছে অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। আর দুজনের ঠিক মাঝখানে আসন নিলেন অর্ণব, হাতে গিটার।

অর্ণব মঞ্চে এসেই ক্ষমা চাইলেন চারটার শো পাঁচটায় শুরু করায়।

এদিকে মঞ্চে বুনোর ডান পাশে বসে আছেন ‘চুমকি চলেছে’ গানটি আবারও জনপ্রিয় করে তোলা পান্থ কানাই। বহুদিন গান শোনা যাচ্ছিল না তার। 

ওদিকে মোহম্মদ শোয়েবের পাশে বসেছেন দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ও গিটারিস্ট সাদ।

রবীন্দ্রসংগীত দিয়েই শুরু করলেন অর্ণব। গাইলেন ‘মারের সাগড় পাড়ি দেব’। ‘সোনা দিয়া বান্ধাইয়াছি’ গানটিতে গলা মেলালেন বুনো। এরপর একে একে চলল ১৭ বছরের আড্ডার স্মৃতিময় গান ‘হারিয়ে গিয়েছি’, ‘হোক কলরব’।

আবার কথা বলতে শুরু করলেন, বলতে থাকলেন বুনোর সঙ্গে তার উনিশ বছরের সম্পর্ক কেমন দাঁড়িয়েছে। ধন্যবাদ দিলেন বড়ভাই সমতুল্য পান্থ কানাই এবং মোহাম্মদ শোয়েবকে।

এবার পান্থ কানাইকে নিয়ে গাইলেন শচীন দেব বর্মনের গান ‘মনো দিল না বধু’।

এরপরই বর্ষার রাগ ‘মেঘ’ আলাপ করলেন মোহাম্মদ শোয়েবকে নিয়ে। শোয়েব শুরু করলেন বন্দিশ ‘গগনে গরজে চমকতা’। স্থায়ী শেষ করতেই একই তালে ‘তোর জন্য আকাশ থেকে পেঁজা’ ধরলেন অর্ণব। রাগ ও গানের সম্মিলনে অন্য রূপ পেল পরিবেশনাটি।

‘কান পেতে রই’, ‘তোমার জন্য’সহ আরও কিছু গান পরিবেশন করলেন অর্ণব। এরপর শোয়েব গাইলেন নজরুলসংগীত ‘সৃজন ছন্দে আনন্দে নাচো নটরাজ হে মহাকাল’। তিলককামোদ রাগের এ গানটি ঝাপতালে গাওয়ার নিয়ম। শোয়েব গাইলেন ড্রামস, বেইজ, গিটারের সঙ্গে, তবে স্বাদ কিন্তু একই। মোহম্মদ শোয়েব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি সংগীত কলেজের শিক্ষক। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভোকাল মিউজিকে মাস্টার্স করেছেন তিনি।

এরপর আবার শুধু অর্ণব। মাঝে পান্থ কানাইয়ের কণ্ঠে শোনা গেল লালনের ‘জাত গেল’। পান্থ কানাই ২০০১ সালে সংগীত থেকে বিরতি নেন। ২০১২ সাল থেকে অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডসের সঙ্গেই কাজ করছেন।

শ্রোতাদের অনুরোধে একের পর এক গান গেয়েই চলেছেন অর্ণব। ঘড়ি যখন রাত আটটার কাঁটা ছুঁই ছুঁই করছে এমন সময় ‘সে যে বসে আছে’ গেয়ে শেষ করলেন কনসার্টটি।

এই কনসার্টের টিকিট বিক্রির টাকা ব্যবহৃত হবে ‘কান পেতে রই’ সংগঠনটির কাজে। অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের ছোট মেয়ে ইয়েশিম ইকবাল তার তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশের প্রথম মানসিক সহায়তার হেল্পলাইন। যেখানে ফোন কলের মাধ্যমে যে কেউ পেতে পারেন মানসিক সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান।

‘কান পেতে রই’ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি দাতব্য সংগঠন হিসেবে। সম্প্রতি বিশ্বের ৪০টি দেশে এমন সহায়তামূলক সংগঠন রয়েছে।

‘কান পেতে রই’ এর বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন:  www.shuni.org