বুলবুল আহমেদ স্মরণে

অভিনেতা বুলবুল আহমেদ স্মরণে স্বপ্নলোকের অনুষ্ঠান

রাশেদ শাওনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2013, 05:59 AM
Updated : 17 July 2013, 05:59 AM

প্রয়াত বুলবুল আহমেদকে একজন শুদ্ধ অভিনেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম। ১৭ জুলাই শিল্পকলা একাডেমীর সেমিনার কক্ষে স্বপ্নলোক আয়োজিত স্মরণ সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে তিনি এ কথা বলেন।

চাষী নজরুল ইসলাম আরও বলেন, “আমরা ছিলাম সমবয়সী। আমার ‘চন্দ্রনাথ’ সিনেমায় অভিনয় করতে এসে অভিমান করে তিনি নির্মাণ করেন তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘রাজলক্ষী শ্রীকান্ত’। তবে সিনেমাটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়নি। এরপরও তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব টিকে থাকে। আমৃত্যু এ সম্পর্ক ছিল।”

তিনি স্মৃতিচারণ করে আরও বলেন, “আমরা একবার সুচিত্রা সেনের একটি প্রযোজনা দেখতে কলকাতায় যাই। সেখানে আমাদের সঙ্গে কথা হয় সত্যজিত রায়, দীলিপ কুমার প্রমুখের সঙ্গে।”

সে সময়ের নানা ঘটনার কথাও তিনি শোনান। প্রয়াত এই অভিনেতা, নির্মাতা ও প্রযোজক এর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অভিনেতা, নির্মাতা গাজী রাকায়েত, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল ঝুনা চৌধুরী, চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান, অভিনেতা ও বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান শামীম শাহেদ।

সভাপতির বক্তব্যে স্বপ্নলোকের প্রধান ফিরোজ খান বলেন, “বুলুবল আহমেদ ছিলেন আমার পিতার মতো। তার সঙ্গে ২০০০ সালে আমি কাজ শুরু করি। আমি ছিলাম তার সহকারী পরিচালক। আমি তার পরিচালনায় ২০০৬ সালে কাজ করেছি। পরে তার পরিবারেরও সঙ্গে আমার সখ্য হয়। তিনি মারা যাওয়ার পরে ¯^প্নলোক তার স্মৃতি ধরে রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে।”

আলোচনা শেষে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত বুলবুল আহমেদ অভিনীত ‘দেবদাস’ প্রদর্শিত হয়।

বুলবুল আহমেদ ২০১০ সালের ১৫ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। সত্তর ও আশির দশকে আলমগীর কবিরের ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্য কন্যা (১৯৭৫), সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), রূপালী সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২) ও মহানায়ক (১৯৮৫) সিনেমাতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে সবার মনোযোগ কাড়েন বুলবুল আহমেদ। চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত দেবদাস চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

বুলবুল আহমেদের জন্ম ১৯৪১ সালে পুরান ঢাকার আগামসি লেনে। তার আসল নাম তাবারক আহমেদ, আদর করে তার বাবা-মা তাকে বুলবুল বলে ডাকতেন। পিতা অভিনেতা-নাট্যকার খলিল আহমেদ ছিলেন পাকিস্তান আমলের অর্থ বিভাগের ডেপুটি সেক্রেটারি। বুলবুল আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটরডেম কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে কিছুদিন সিলেট এমসি কলেজেও পড়াশোনা করেছেন। সিলেট এমসি কলেজে থাকাকালে মঞ্চনাটক চিরকুমার সভায় কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করে উপস্থিত সবার নজর কাড়তে সক্ষম হন। পড়াশোনা শেষ করার পর তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন। বুলবুল আহমেদের স্ত্রী ডেইজি আহমেদ। এই দম্পতির তিন সন্তান হলেন মেয়ে ঐন্দ্রিলা ও তিলোত্তমা এবং ছেলে শুভ।