রান্নাঘরের টুকিটাকি

রসুই ঘরে তেলচিটে পড়েছে, রান্নার পর পাতিলে লেগে থাকা তেল ধোয়ার পরও পরিস্কার হচ্ছে না কিংবা তরকারিতে হলুদ বেশি পড়ে গেছে কমাবেন কীভাবে! রন্ধনশিল্পীদের পরামর্শ নিয়ে এ ধরনের সমস্যার সমাধান নিয়েই সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।

লাইফস্টাইল ডেস্কপ্রতিবেদক, মরিয়ম মনি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2013, 07:36 AM
Updated : 4 March 2013, 07:37 AM

* রান্না করা খাবার পরে খাওয়ার সময় গরম করতে গেলে অনেক সময় নিচের অংশ পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে একটি পাত্রে পানি দিয়ে তার ওপর খাবারসহ পাত্র বসিয়ে গরম করলে ঠিকমতো গরমও হবে এবং পুড়বে না।

* নুডলস সেদ্ধ করার সময় একটু তেল পানিতে মিশিয়ে দিলে দেখবেন নুডলসগুলো ঝরঝরে হয়েছে।

* পাকা টমেটো ঘরে রাখলে সেগুলো নরম হয়ে যায়। নরম টমেটোগুলোকে শক্ত করতে চাইলে কিছুক্ষণ লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। দেখবেন টমেটো শক্ত হয়ে উঠেছে।

* ঘি বেশিদিন ঘরে রাখলে একটু গন্ধ হয়ে যায়। এক টুকরো গুড় ঘিয়ের কৌটায় রেখে দিলে দেখবেন অনেক দিন পর্যন্ত ঘিয়ের প্রকৃত গন্ধ রয়ে যাবে।

* পেঁয়াজ ভাজার সময় সামান্য পরিমাণ কাঁচা লবণ তাতে ছিটিয়ে দিলে তাড়াতাড়ি বাদামি বর্ণ ধারণ করবে।

* দই খুব বেশি টক হয়ে গেলে পাতলা কাপড়ে দইটুকু ঢেলে ১০-১৫ মিনিট ঝুলিয়ে রাখুন। পানি ঝরে গেলে দইয়ের অংশে দুধ বা পানি মেশান। টক স্বাদ থাকবে না।

* খাবারে বেকিং পাউডারের পরিবর্তে পাউরুটি টুকরো করে ব্যবহার করতে পারেন।

* রান্নায় ব্যবহৃত উদ্বৃত্ত তেল বা ঘি পরিষ্কার করতে হলে এক টুকরো আলু দিয়ে তাপ দিতে থাকুন।

* পিঁপড়ার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে এক টুকরো স্পঞ্জ চিনির পানিতে ভিজিয়ে পিঁপড়ার গর্তের কাছে রেখে দিন। স্পঞ্জের মধ্যে সব পিঁপড়া জড়ো হবে। এবার পিঁপড়াসহ স্পঞ্জটি দূরে ফেলে দিন। সমস্যা মিটে যাবে।

* হাতের কাছে ঝাল মরিচ না পেলে চিলি সস বা গোলমরিচ ব্যবহার করতে পারেন।

* রান্নার পর দেখা যায় চুলার চারধার এবং কখনো চুলার পাশের দেয়ালে তেল চিটচিটে হয়ে যায়। আর সেটা সাধারণ পানি দিয়ে ধুলে কখনোই ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। গরম পানি এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায়। স্টিলের মাজুনিতে সাবান গরম পানি মিশিয়ে দেয়াল এবং চুলার চারপাশ পরিষ্কার করুন।

* নতুন বোতল থেকে সস বের করা সহজ নয়। বোতলের তলা পর্যন্ত একটি স্ট্র ঢুকিয়ে দিন। স্ট্র বের করে নিলে এবার সস বের করা সহজ হবে।

* প্রেসার কুকারের মরিচা দূর করার জন্য লেবুর খোসা দিয়ে ঘষে পরে পানিতে সেদ্ধ করুন। মরিচা থাকবে না।

* মোম রেফ্রিজারেটরে রাখলে বেশি সময় ধরে জ্বলে।

* রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিশেষ করে চুলা, দা, বঁটি, ছুরি, কেঁচি’র কাজ শেষে পরিষ্কার করে ধুয়ে-মুছে রাখুন। ফলে এগুলোর স্থায়িত্ব বাড়বে।

* রান্নাঘরের হাঁড়ি-পাতিল বা কড়াই যদি চকচকে করতে চান তাহলে কিছু পরিমাণ তেঁতুল বা টমেটো সংশ্লিষ্ট পাত্রে রেখে পানি দিয়ে পূর্ণ করে কিছুক্ষণ ফুটাতে থাকুন। ধুয়ে ফেলুন পাত্র চকচকে হয়ে যাবে।

* মাংস তাড়াতাড়ি সিদ্ধ করতে চাইলে সুপারি মধ্যখানে কেটে দিন, কাঁচা পেঁপেও দিতে পারেন, এমনকি যদি আপনি তরকারিতে সামান্য পরিমাণ মেথি ছেড়ে দেন, তাহলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি মাংস সিদ্ধ হয়ে যাবে।

* একসঙ্গে বেশি পরিমাণ ছোলা কেনা হয়ে গেলে পোকায় ধরার সম্ভাবনা থাকে। ছাই মিশিয়ে রাখুন, পোকায় ধরবে না। শুধু রান্নার আগে ধুয়ে নেবেন।

* চাল ও ডাল আগে পানিতে ভিজিয়ে রেখে রান্না করলে সময় কম লাগে।

* রান্নার সময় তেল ছিটকে যায়, সে ক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ লবণ গরম তেলে দিয়ে দিলে তেল ছিটকাবে না।

* ফুলকপি রান্না করার সময় দুই চা-চামচ পরিমাণ দুধ দিয়ে দিন। রান্না করার পরও ফুলকপি সাদা থাকবে।

* রান্না করতে অনেক সময় তরকারিতে হলুদ বেশি পড়ে যায়। রান্নায় ব্যবহৃত খুন্তিটি চুলায় পুড়িয়ে লাল করে তরকারিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। সমস্যা মিটে যাবে। অথবা কিছু পুঁইশাকের পাতা দিয়ে জ্বাল দিন, হলুদের গন্ধ কমে যাবে।

* রান্নার জন্য ব্যবহৃত হাঁড়িতে চুলার কালি পড়ে। এ ক্ষেত্রে হাঁড়ির তলায় মাটি বা সাবানের পানি লাগিয়ে চুলায় বসালে কালি কম পড়বে।

* শাকসবজি কাটার আগে ধুয়ে নিন, এতে সবজির গুণাগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে।

* দুধে সামান্য বেকিং সোডা মিশিয়ে খাবার তৈরি করার সময় ব্যবহার করলে দুধ ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

* পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা করে এবং চোখ থেকে পানি ঝরে। তাই পেঁয়াজ কাটার কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। পেঁয়াজের ঝাঁঝ কমে যাবে অথবা বঁটির মাথায় একটি পেঁয়াজ কেটে আটকিয়ে রাখুন, দেখবেন চোখ জ্বালা করবে না।

* বেশি পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করতে চাইলে বালির ওপর রাখুন সহজে পচবে না।

* ফ্লাক্স ব্যবহার করার পর কয়েক দিন ফেলে রাখলে তাতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। এক চামচ চিনি ফ্লাক্সে দিন, সমস্যা মিটে যাবে।

* ঢেঁড়স ভাজা মচমচে করতে চাইলে আগের দিন রাতে ধুয়ে চাকা চাকা করে কেটে শুকিয়ে রাখুন। পরদিন ভেজে নিন, দেখবেন তেলও কম লাগবে আবার সময়ও বাঁচবে এবং মচমচে হবে।

* চুনের পানিতে ডিম ভিজিয়ে রাখলে দীর্ঘদিন ডিম ভালো থাকে।

* বেগুন ভাজতে তেল বেশি লাগে। যদি বেগুনে হলুদ মাখিয়ে ছেঁকা তেলে চেপে ভাজেন, তাহলে খুব কম তেল লাগবে।

* দুধ পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে জ্বাল দেওয়ার আগে গরম পানি দিয়ে পাত্রটিকে ধুয়ে ফেলুন।

* মচমচে ওমলেট বানাতে হলে ডিমের সঙ্গে সামান্য বেসন এবং দুধ মিশিয়ে ভাজুন।

* ডিম ফেটে গেলে তা সিদ্ধ করতে গিয়ে ফাটা দিয়ে ডিমের অংশ বের হয়ে যায়। যদি ডিমের ফাটা অংশে সোলাটেপ লাগিয়ে সিদ্ধ করেন, তাহলে ডিমের অংশ আর বের হবে না।

* বর্ষার দিনে প্রায়ই রান্নাঘরের ড্রেনের ছাঁকনি দিয়ে কেঁচো উঠে আসে। রাতে ছাঁকনির উপর ব্লিচিং পাউডার বা নেপথলিন দিয়ে রাখলে আর কেঁচো উঠবে না।

মডেল: বৈশাখী

আলোকচিত্র: অপূর্ব খন্দকার