ফল দিয়ে সৌন্দর্য চর্চা

নানান চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে স্পট ক্রিম, ফেয়ারনেস ক্রিম, লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করেও হয়েছেন ক্লান্ত। অনেকেই হয়তো বয়স বাড়ার কারণে তারুণ্যের সৌন্দর্য ধরে রাখতে পারছেন না

লাইফস্টাইল ডেস্কপ্রতিবেদক: মরিয়ম মনি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2013, 06:25 AM
Updated : 16 Jan 2013, 06:25 AM

মুখে দেখা দিয়েছে ছোপ ছোপ দাগ। বেশি বয়সে অনেক মহিলাই নানান রকম ত্বকের সমস্যার ভোগেন। অনেক সময় চিকিৎসা নিয়েও কাজ হয় না। এদেশে ত্রিশোর্ধ মেয়েদের ত্বকের নানামুখী সমস্যার কথা ভেবে ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের কর্ণধার কণা আলম ২০০৭ সালে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন ‘ফ্রুটস পিল’ নামে একধরনের ত্বকের চিকিৎসা বা স্কিন ট্রিটমেন্ট। মেছতা, চোখের চারপাশে কালো দাগ বা ডার্ক সার্কেল, ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারানো, ফুস্কুড়ি বা পিম্পলস, ত্বক ফর্সা করাসহ বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যার সমাধান সম্ভব এ ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে।

এই সম্পর্কে কনা আলম জানান, “সাত দিনের এই চিকিৎসা-ক্রমের জন্য প্রথমে আমরা ত্বক পরীক্ষা করে নেই। এরপরে ত্বকের ধরন অনুযায়ী গাইকোলিক, টিসিএ, ফ্রুটস, ফ্লোরাসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার তিনদিন পরে আবার আমাদের কাছে আসতে হয়। তখন আমরা পরের পরিচর্যার জন্য একটি মেডিসিন বা অষুধ দিয়ে থাকি। এরপর একমাস এই সেবা গ্রহনকারীকে আমরা পর্যবেক্ষণে রাখি। একমাস পর থেকে ঘরে বসেই কীভাবে নিজের এ সৌন্দর্যকে দীর্ঘস্থায়ী করবে তার পরামর্শ দেয়া হয়। এ চিকিৎসা নেওয়ার আগে ও পরের নিয়মাবলী মেনে চললে যে কেউ তার সৌন্দর্যের চাহিদাকে অনায়াসেই পূরণ করে নিতে পারেন। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ত্বকের এই পিলঅফ ট্রিটমেন্ট বা খোসা ছাড়ানো ফল ও ফলের খোসা দিয়ে চিকিৎসা খুবই জনপ্রিয়। আমাদের দেশেও দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন। তারা ঘরে বসেই বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ খবর নিয়ে ত্বকের সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজছেন। ফল দিয়ে এরকম চিকিৎসা ডার্মাটোলজিস্টরা (ত্বক বিজ্ঞানী) এবং স্কিন স্পেসালিস্টরা (ত্বক বিশেষজ্ঞ) এ ধরনের চিকিৎসা দিলেও, চিকিৎসা পরবর্তী পরামর্শগুলো দেন না। ফলে অচিরেই আবার একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।”

কনা আলম জানান, “বাংলাদেশে এ ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। উন্নত দেশগুলোতে দেখেছি তারা ত্বক সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। বিশেষ করে যারা বাইরে বেশি ঘোরাঘুরি করেন সেসব মহিলারা পিলিং এর প্রতি খুব বেশি আগ্রহী। আমার কাছে বিষয়টা ভালোই মনে হলো । ফলে আমি এর উপরে ৬ মাসের একটি কোর্স সম্পন্ন করি। দেশে এসেই জাপানে উদ্ভাবিত এই ‘ফ্রুটস পিলিং ট্রিটমেন্ট’এর সেবা ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের মাধ্যমে দেয়ার চেষ্টা করি। প্রথম থেকেই এ সেবা অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সব ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এ পিলিং এর মাধ্যমে যে কেউ একটি পারফেক্ট ত্বক নিয়ে চলাফেরা  করতে পারেন। কারণ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের শরীরের মধ্যে এক ধরনের শুষ্কতার সৃষ্টি হয়। যার কারণে ত্বকের উপর বলিরেখাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। যদি বয়স ত্রিশ-এর উপরে হয় তবে অবশ্যই একবারের জন্য এই ট্রিটমেন্ট করানো উচিৎ। একবার করানোর পরে যদি নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে থাকেন তবে তার আর এ ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন হবে না। তবে যারা সময় পান না বা পিলিংএর পরের পরিচর্যা ঠিকমতো করতে পারেন না তারা ২ থেকে ৫ বছর পরে আবার পিলিং করাতে পারেন।

এ ছাড়াও ঘরে বসে কিছু নিয়ম পালন করা উচিৎ

  • কলা ও মুলতানী মাটি একসঙ্গে পেস্ট করে সেটা চেহারা ও গলার ত্বকে ১০ মিনিট ধরে লাগিয়ে রাখুন।
  • সাবান ব্যবহার না করে ফেসওয়াশ ব্যবহার করা ভালো।
  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মুখ হাত ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • বাইরে বের হলে রোদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • প্রচুর পারমানে পানি পান করুন। প্রয়োজনে স্যালাইন পানি পান করা চেষ্টা করুন।
  • দুপুর ও রাতের খাবারে সালাদ থাকলে ভালো হয়।
  • প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • চা কিংবা কফি পান করলেও ত্বকের ক্ষতি হয়। সুতারাং চা-কফি খেলেও তা পরিমানে কম খাবার চেষ্টা করুন।

ছবিঃ আরিফ আহমেদ