পুরো নাম মীর আফসার আলী, কিন্তু পরিচিতি বেশি মীর নামে। শুক্রবার ফেইসবুক পোস্টে মীর লিখেছেন, “আমায় শোনার জন্য সবাইকে ভালোবাসা। তবে মির্চি ছেড়েছি, রেডিও নয়। কষ্ট হচ্ছে…একটু…ওই ৯৮.৩% এর মতন। গল্পের পরবর্তী অংশ ব্রেকের পর।“
সোশ্যাল মিডিয়ায় মীরের মির্চি ছাড়ার ঘোষণায় ভক্ত অনুরাগীরা হোঁচট খেয়েছেন। মীরের পোস্টের কমেন্টে টালিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় লিখেছেন “রেডিওর সঙ্গে প্রেমের সংজ্ঞাটা আজ বদলে গেল।“
‘তবে মির্চি ছেড়েছি, রেডিও নয়’ মীরের এই কথাটিতে অনেকে মনে করছেন নতুন কোন রেডিওতে ভেসে আসবে মীরের কণ্ঠ।
শনিবার কলকাতার ‘সংবাদ প্রতিদিন’ জানাল মীরের মির্চি ছাড়ার কারণ। কোনো রাগ, দুঃখ বা অভিমান থেকে নয়, মীর মনে করছেন যুগ বদলের সঙ্গে রেডিও সেভাবে বদলায়নি। রেডিও কাঠামোর একটি আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন বলেও অনুভব করছিলেন তিনি। তাই কিছুদিন কাজের বিরতি নিতে চান মীর। বহু বছর ধরে একই কাজ করে যাওয়ার একঘেমেয়েমি এবং ক্লান্তিও কাটাতে চান তিনি।
মীর বলেন, “অনেকেই বলবেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। এই মুহূর্তে সেটা করতে আমি অপারগ। নিজেকে একটু সময় দিতে চাই, এটা বলতে পারেন আমি বেমানান।“
রেডিও ছাড়ার পর সবচেয়ে কি ‘মিস’ করছেন জানতে চাইলে মীর বলেন, “ রেডিওর জগৎটা হল একটা একার ঘর, মাইক্রোফোন আর আমি। মনে হচ্ছে সেই ঘরে মাইক্রোফোনটাকে একলা ফেলে এসেছি। যার সুইচ আমার হাতে থাকত এবং যেটার মাধ্যমে প্রতিদিন সকালে আমি বহু মানুষকে রেডিওকে লাইভ এন্টারটেন করতে পারতাম।“
মীর মন থেকে বিশ্বাস করেন, কেউই অপরিহার্য নয়। নতুন প্রজন্ম আগের প্রজন্মকে সরিয়ে জায়গা করে নেয়।
কলকাতার তুমুল জনপ্রিয় রেডিও আরজে মীর।১৯৯৪ সালের ৬ আগস্ট থেকে মির্চি সঙ্গে তার পথচলা। দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহের সোম থেকে শনি চার ঘন্টার ‘মির্চি মর্নিংস’ এবং ‘সানডে সাসপেন্স’ প্রচারিত হয়েছে মীরের হাত ধরে। বলা যায় রেডিও মির্চি আর মীর যেন সমার্থক।
ফেসবুকে মীরের পোস্টে একজন জানতে চেয়েছেন, ‘সানডে সাসপেন্স কি আর শোনা যাবে?”।
আরেকজন লিখেছেন, “মীর ছাড়া মির্চি…ভাবাই যায় না।“
মির্চি ছাড়াও স্ট্যান্ডআপ কমেডি শো ‘মীরাক্কেল’ করে পশ্চিমবঙ্গের মতো বাংলাদেশেও তুখোড় জনপ্রিয় হয়ে যান মীর। এছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ডিডি বাংলা চ্যানেলের নিউজ প্রোগ্রাম ‘ খাস খবর’ করেছেন তিনি। এছাড়া টিভি শো ‘হাউ মাউ খাউ’, ‘বেটা বেটির ব্যাটল’ এ সঞ্চালনা করেছেন।
‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘আশ্বর্য প্রদীপ’, ‘কলকাতার কলম্বাস’সহ কয়েকটি সিনেমাতেও দেখা গেছে মীরকে। আছে ‘ব্যান্ডেজ’ নামে একটি গানের দলও। শেষ কয়েক বছরে ইউটিউবে ‘ফুড ব্লগিং’ এ মেতে উঠছেন মীর। ‘ফুডকা’ নামের শো’র জন্য সম্প্রতি ঢাকাও ঘুরে গেছেন তিনি।