ডিজিটিল মিউজিক নিউজ জানাচ্ছে চীনের দর্শকদের জন্য শেষ শুক্রবারে একটি লাইভস্ট্রিম শো করে ১৯৯৩ সালে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো থেকে উঠে আসা ৯০ দশকের অন্যতম তুমুল জনপ্রিয় এই পপ ব্যান্ড দলটি।
এখন ব্যান্ডদলটির পরিকল্পনা আগামী চীনে লাইভ কনসার্টে যাবেন তারা।
নব্বইয়ের দশকে প্রতিষ্ঠিত এই দলটির একাদশ বিশ্বব্যাপী কনসার্ট ডিএনএ’র প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে দেড়শটি আয়োজন শুরু হয় কোভিড মহামারীর আগের বছর ২০১৯ এ। কিন্তু মহামারীর জন্য ২০২০ এর ১৫ মার্চ আয়োজনটি ছোট করে আনা হয়।এরপর সে সব আয়োজন ২০২১ সালেও শেষ করা সম্ভব হয়নি।
এখন ২০২২ এবং ২৩ সাল জুড়ে বিশ্বব্যাপী কনসার্ট করবে ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ। বিশ্বব্যাপী কনসার্ট ডিএনএ’র শুক্রবার ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ লাইভস্ট্রিম শো-তে আসে। দুই ঘণ্টার ওই শোটি আগে রেকর্ড করা ‘সো মি দ্য মিনিং’ দিয়ে শেষ হয়েছে।
দ্য ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ বর্তমানে উত্তর আমেরিকা সফরে আছে, চীন সফরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সদস্যরা।
তবে দ্য ব্যাকস্ট্রিট বয়েজকে সাফল্য এনে দেয় তাদের তৃতীয় অ্যালবাম ‘মিলেনিয়াম’। ২০০০ সালে আসে আসে তাদের আরেকটি অ্যালবাম ‘ব্ল্যাক এন্ড ব্লু’।
এর পর কিছুদিন আড়ালে থেকে ২০০৫ এ তারা উপহার দেয় ‘নেভার গন’ অ্যালবামটি। শিল্পী সেড-এর পর দ্য ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ ছিল প্রথম দল যাদের প্রথম সাতটি অ্যালবাম বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষ ১০-এ জায়গা করে নেয়। মিলিনিয়াম এবং ব্ল্যাক এন্ড ব্লু বিলবোর্ড ২০০ তে প্রথম সপ্তাহে প্রথম এবং নেভার গন তৃতীয় স্থান দখল করে নেয়। মিলিনিয়াম অ্যালবামটি প্রথম সপ্তাহে ১.১ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। সে বছরের বেস্ট সেলিং অ্যালবাম ছিল এটি।
অক্টোবর ২০০৫ এ দলটি ‘টিভি হিউসেট’ নামক একটি সুইডিশ টক শো-তে ‘মিউজিক্যাল গেস্ট’ হিসেবে পারফর্ম করে দলটি।
দীর্ঘ যাত্রায় ব্যান্ডটি যে খুব মসৃণভাবে চলেছে তা নয়, ভাঙাগড়ার খেলাও ছিল সদস্যদের মধ্যে। টানা ১৩ বছর একসঙ্গে গান গাওয়র পর দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কেভিন রিচার্ডসন ২০০৬ এ দল ছেড়ে দেন। কিছুদিন দল টেনে নিয়ে গেছেন বাকি চারজন।
দ্য ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ, ‘আনব্রেকেবল’ এবং ‘দিস ইস আস’ শিরোনামের অ্যালবাম দুটি অ্যালবাম নিয়ে আসে ২০০৭ এবং ২০০৯ এ।
ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ সবসময় যে নিজস্ব অ্যালবামই বের করে এসেছে তা নয়, অন্য দলের সঙ্গেও জোট বেঁধে গেয়েছে তারা। ২০১১ সালে দলটি নিউ কিডজ অন দ্য ব্লক এর সাথে মিলে সুপার গ্রুপ ‘নটবিএসবি’ নামে নতুন একটি কম্পাইলেশন অ্যালবাম বের করে।
এদিকে ছয় বছর বাদে ২০১২ সালে ঘরের ছেলে হয়ে ঘরে ফিরে আসে রিচার্ডসন। এরপর বিশ বছর পূর্তিতে ২০১৩ সালে ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ শ্রোতাদের জন্য নিয়ে আসে ‘ইন এ ওয়ার্ল্ড লাইক দিস’ অ্যালবাম। এরপরের বিরতিটিও দীর্ঘ। ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় ব্যাকস্ট্রিটের নবম অ্যালবাম ‘ডিএনএ’।
দলটির নামকরন হয়েছিল অরল্যান্ডোর ব্যাকস্ট্রিট মার্কেট নামক একটি ফ্লি মার্কেট থেকে।
অ্যালবামের পাশাপাশি বরাবরাই কনসার্ট ট্যুর করেছে পপ ব্যান্ডটি। ১৯৯৭ এবং ৯৮ এ দ্য ব্যাকস্ট্রিট বয়েজের প্রথম কনসার্ট চলে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে, যা তাদের আরও জনপ্রিয় করে তোলে। কনসার্টটি পুরো ‘ব্যাকস্ট্রিট ব্যাক’ অ্যালবামের পাশাপাশি ‘ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ’ এর কিছু গান পরিবেশন করে। ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ তাদের কনসার্ট ট্যুরের রেওয়াজ ধরে রেখেছে আজও।
এখন অব্দি দলটি ৮টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড- এর মনোনয়ন পেয়েছে ব্যান্ডটি। ২টি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ৫ টি বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড, ২টি এমটিভি ভিডিও মিউজিক অ্যাওয়ার্ড এবং একটি জুনো অ্যাওয়ার্ড সহ বেশ কিছু অ্যাওয়ার্ড পুরেছে ঝুলিতে। ৯০ দশকের এই জনপ্রিয় ব্যান্ডটিকে অন্যতম ব্যবসাসফল ব্যান্ডদের একটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আনন্দের ব্যাপার হল ব্যান্ডটি হারিয়ে যায়নি। স্পটিফাই-এর তথ্যানুযায়ী, মাসিক ১৩,৭৬৫,৬৭৯ জন শ্রোতা রয়েছে এই জনপ্রিয় দলটির। অফিসিয়ালি ২০২৩ সালে দলটির ৩০ বছর পূর্তির কথা থাকলেও ২০২২ সালে তাদের ক্রিসমাস অ্যালবামটি আসার কথা রয়েছে।
তাই হয়ত তারা পরের বছর মুক্তি পাবে এমন অ্যালবামের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর সাথে রয়েছে দারুণ উপভোগ্য ও নতুন চমক ডিএনএ কনসার্টের আয়োজন।