নিপুণ-জায়েদ দ্বৈরথ: স্থিতাবস্থা ‘কঠোরভাবে’ মানতে বললো আপিল বিভাগ

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার যে আদেশ চেম্বার বিচারক দিয়েছেন, তা ‘কঠোরভাবে’ পালন করতে বলেছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2022, 06:27 AM
Updated : 14 March 2022, 07:37 AM

আদালত অবমাননার অভিযোগে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে জায়েদ খানের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে জায়েদ খানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম ও নাহিদ সুলতানা যুথী; অন্যদিকে নিপুণের পক্ষে আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান শুনানি করেন।

জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল এবং নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত গত ২ মার্চ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দেয় হাই কোর্ট।

জায়েদ খানই সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে থাকবেন বলে রায়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। হাই কোর্টের রায়ের পর শপথ নেন জায়েদ খান।

এরপর নিপুণের এক আবেদনে গত ৬ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান চার সপ্তাহের জন্য হাই কোর্টের রায় স্থগিত করে দেন।

এছাড়া নিপুণ আক্তারকে লিভ টু আপিল করতে বলে ৪ এপ্রিল বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সেই সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থাও জারি করা হয়।

এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় নিপুণ সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ ‘অমান্য করে’ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসায় নিপুণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন জায়েদ খান।

ওই আবেদনের ওপর শুনানি করেই সোমবার আপিল বিভাগ ‘কঠোরভাবে’ নির্দেশনা মেনে চলার আদেশ দিয়েছে বলে জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম জানান।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় গত ২৮ জানুয়ারি, পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

সাধারণ সম্পাদক পদের আরেক প্রার্থী নিপুণ নির্বাচনের সময়ই ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনার’ অভিযোগ করেছিলেন জায়েদের বিরুদ্ধে। ভোটের ফল প্রকাশের পর তিনি আপিল করেন।

তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হলেও তাতে ফল একই থাকলে নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন। পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়ে আপিল বোর্ড তার প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা করে। শপথ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন নিপুণ।

কিন্তু জায়েদ খানের আবেদনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত কেন ‘বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।

নিপুণের আবেদনে হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত হয়ে যায়। শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে জারি হয় স্থিতাবস্থা।

পর সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে রুল শুনানি করে হাই কোর্ট যে রায় দেয়, তা জায়েদ খানের পক্ষেই যায়। কিন্তু বিষয়টি আপিল বিভাগে আটকে যাওয়ায় শিল্পী সমিতির সম্পাদক পদের ভবিষ্যৎ ঝুলেই থাকল।  

পুরনো খবর