মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও গান গেয়েছিলেন লতা

উপমহাদেশের কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের পক্ষেও ধরেছিলেন গান; সদ্য স্বাধীন দেশে এসে ছড়িয়েছিলেন তার সুরের ইন্দ্রজাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2022, 05:21 PM
Updated : 6 Feb 2022, 06:04 PM

মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে গান পরিবেশনের কথা ২০১৯ সালে এক টুইটেই লিখেছিলেন সুরের পাখি লতা।

সেই সময়ের স্মৃতি ধারণ করা দুটি ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছিলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শেষে আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। সুনীল দত্তের (প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা) দলের সাথে আমরা অনেক কর্মকাণ্ডে অংশ নিই। সে সময় সেনাবাহিনীর বিমানেই সব জায়গায় গিয়েছি আমরা।”

সুনীল দন্তের অজন্তা শিল্পীগোষ্ঠীর সাথে তার ওই সফর ছিল বলে এক টুইটে জানিয়েছে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন।

সে সময় বাংলাদেশে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছিল লতার।

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সাহায্যে বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি অব মহারাষ্ট্র নামে সংগঠন গড়ে তোলেন ভারতীয় অভিনেত্রী ওয়াহিদা রহমানসহ অন্যরা।

অভিনেতা সুনীল দত্ত, নার্গিস, লতা মঙ্গেশকর ও কল্যাণজি আনন্দজিসহ অনেকে তাদের সাথে যোগ দেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে গান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে শরণার্থীদের সহায়তায় তহবিল সংগ্রহ করেন তারা।

মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য ওয়াহিদা রহমান, সুনীল দত্ত, কল্যাণজি আনন্দজি ও লতা মঙ্গেশকরকে ২০১২ সালে ’মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ দেওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সরকার।

কোভিড পরবর্তী নিউমোনিয়ায় ভুগে রোববার অনন্তলোকে পাড়ি জমিয়েছেন সাত দশকের বেশি সময় সুরের জাদুতে শ্রোতাদরে মাত করা লতা মঙ্গেশকর।

 

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে হাজারের বেশি সিনেমায় গান করেছেন লতা। ভারতের ৩৬টি আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি বিদেশি ভাষাতেও তিনি গান করেছেন।

ভারতীয় বাংলা সিনেমায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা প্রায় ২০০। তার কণ্ঠের ‘প্রেম একবারই এসেছিল নীরবে’, ‘রঙ্গিলা বাঁশিতে’, ‘নিঝুম সন্ধ্যায়’, ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘যা রে উড়ে যারে পাখি’, ‘বলছি তোমার কানে’, ‘চলে যেতে যেতে দিন বলে যায়’ এর মত বহু গান শ্রোতার হৃদয়ে আজও দোলা দেয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই মুক্তি পায় মমতাজ আলীর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র রক্তাক্ত বাংলা। বিশ্বজিৎ ও কবরী অভিনীত সেই সিনেমার সংগীত পরিচালক ছিলেন সলিল চৌধুরী। প্লেব্যাক শিল্পী ছিলেন লতা মঙ্গেশকার, মান্না দে ও সবিতা চৌধুরী। সেই সিনেমার একটি গান ‘দাদাভাই মূর্তি বানাও’ বেশ জনপ্রিয়তা পায় সে সময়।