আমরা কেউই ‘মদ্যপ’ ছিলাম না, গাড়িও দ্রুত চলছিল না: স্পর্শিয়া
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 21 Jan 2022 09:32 PM BdST Updated: 21 Jan 2022 09:32 PM BdST
মধ্যরাতে অভিনেত্রী অর্চিতা স্পর্শিয়াকে বহনকারী দ্রুতগতির গাড়ি থামানো এবং চালক বন্ধুসহ তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে; পুলিশের দাবি মদ্যপ ছিলেন তারা, যা অস্বীকার করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের এ অভিনয়শিল্পী।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজধানীর সাতমসজিদ রোডে দ্রুতগতির একটি গাড়ি থামানো হলে এর চালকের খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ এবং কথা কাটাকাটির জেরে থানায় নেয় ধানমণ্ডি থানা পুলিশ।
পুলিশের দাবি, চালক প্রাঙ্গণ দত্ত অর্ঘ্য ‘মদ্যপ’ ছিলেন। আর ওই গাড়িতে থাকা অভিনয়শিল্পী স্পর্শিয়া বলেন, “আমরা কেউই ‘মদ্যপ’ ছিলাম না। গাড়িও দ্রুতগতিতে চলছিল না।“
গাড়ি থামানোর পর ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায় এবং পরে মুচলেকা রেখে গভীর রাতে ছেড়ে দেয়। অর্চিতার দাবি, মধ্যরাতে তাদের অহেতুক কেন আটকানো হল সেই উত্তর তিনি এখনও পাননি।
কালো রঙের লেক্সাস গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী প্রাঙ্গণ। তার বাবা সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত। চালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন স্পর্শিয়া।
এ বিষয়ে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা দ্রুতগতিতে যাওয়ায় গাড়ি থামানো হয়। পরে তারা পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে থানায় নেওয়া হয়। সেখানে তারা ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চান। পরে তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তারা মদ্যপ ছিলেন কি না সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে আমরা পরীক্ষার প্রয়োজন মনে করিনি।”
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাত মসজিদ সড়কে টহল ডিউটিতে ছিলেন ধানমণ্ডি থানার উপপরিদর্শক মাহাবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সাতমসজিদ রোডে ইউনিমার্টের সামনে একটি রিকশা বা সিএনজি চলে আসায় দ্রুতগামী একটি গাড়ি সজোরে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যায়। পরে তিনি সামনে এগিয়ে গিয়ে চালককে জিজ্ঞাসা করেন ‘ওভারস্পিডে গাড়ি চালাচ্ছেন কেন?’।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গাড়িটির চালক তখন নেমে এসে থামানোর জন্য খারাপ ব্যবহার করেন। বলতে থাকেন, ‘হু আর ইউ’। চালকের সঙ্গে একজন তরুণীও ছিলেন।
“তারা দুজনই পুলিশের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তারা গাড়িসহ তাদের থানায় নিতে বলেন। পরে আমরা জানতে পারি তিনি অভিনেত্রী স্পর্শিয়া।“
পুলিশ কর্মকর্তা মাহাবুব বলেন, “ওরা ড্রাংক ছিলেন। চালক নিজেই বলেন যে তিনি অল্প পরিমাণে মদ পান করেছেন। তিনি এ কথাও বলেন যে তার মদ পানের পারমিট রয়েছে। তবে সেই পারমিট দেখাতে পারেননি। তিনি খুবই বাজে ব্যবহার করছিলেন।
“পরে ওসি স্যার বললেন থানায় নিতে। আমরা থানায় নিয়ে গেলাম। পরে সেখানে তার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।“
তিনি আর এ ধরণের আচরণ করবেন না বলে মুচলেকায় উল্লেখ করেন বলে এসআই মাহবুব জানান।
পুরো ঘটনাটা মিটতে রাত প্রায় সাড়ে তিনটা বেড়ে যায় বলে পুলিশ জানায়।
মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে যে খবর এসেছে তা নিয়ে অর্চিতা স্পর্শিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা কেউই ড্রাংক ছিলাম না। খবরে ভুলভাল লেখা হয়েছে। আমরা একটি পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলাম।
“পারিবারিক আয়োজনে মানুষ কীভাবে মদ্যপ থাকে? যে কোনো ধরনের টেস্ট দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে পারব আমরা মদ্যপ ছিলাম না।“
বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “গাড়ি দ্রুত গতিতে ছিল না। আমি সামনের সিটে বসা ছিলাম। হার্ডলি সিক্সটিতে ছিল। সিক্সটি স্পিড কি দ্রুত গতি?
“কোনো অ্যাক্সিডেন্টও হয়নি। আমরা টার্ন নিচ্ছিলাম। পুলিশ এসে বলল, আপনারা যেভাবে টার্ন নিলেন, সিএনজিতে তো লেগে যেতে পারত। আমরা বলেছি, লাগে নাই তো।“
বাসায় ফিরছিলেন জানিয়ে স্পর্শিয়া বলেন, আমরা তো কাউকে বিরক্ত করছি না। আপনারা আমাদের কেন খামোখা থামাচ্ছেন। এটা পুলিশের গায়ে লেগেছে। তারা গাড়ি থামিয়েছেন।
‘থানায় ধরে নিয়ে গেছে এটা ভুল’
রাতের ঘটনার বর্ণনা করে স্পর্শিয়া বলেন, “আমি গাড়িতেই বসা। প্রাঙ্গণ গাড়ি থেকে নেমে আধা ঘণ্টার মতো কী কথা বলছে আমি জানি না। পুলিশ তাকে চিপায় চিপায় নিয়ে কথা বলছে। কোনো অপরাধ না করেও আমি আধা ঘণ্টা কেন বসে আছি, সেই উত্তর পাইনি। এখনও পর্যন্ত।
“আমি বলেছি, এসআই আছেন? পরে উনি আসেন। উনি বললেন, আপু আপনি চলে যেতে পারেন বাসায়। আমি বললাম, ভাইয়া আমি চলে যাবে কিন্তু এতক্ষণ আমাকে কেন বসায়ে রাখছেন। আমাকে বলে, আপনি বসে থাকবে বাধ্য। আমি বললাম, কেন বাধ্য? তারা কাগজ চেক করেছে। কাগজও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।“
গাড়ির কাগজও ঠিকঠাক ছিল উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী বলনে, “তারা যে বলতেছে আমরা মদ্যপ ছিলাম, গাড়িতেও তো কিচ্ছু ছিল না। এই করতে করতে আমার আরও কয়েকজন ছোটভাই আসছে। তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তো প্রাঙ্গণ নিজে বলেছে, অনেকক্ষণ ধরে এখানে আছি আমরা থানায় গিয়ে আপনাদের ডিসির সঙ্গে কথা বলব। এটা নিয়ে তারা অনেকক্ষণ প্যাঁচাইছে।
“বিষয়টি নিয়ে আমার এত রাগ হয়েছে; আর বসে থাকতে পারি নাই। গাড়ির ব্যাকডালা খুলে বসে আমি বলেছি, ভাইয়া আগে আমাকে বলবেন, কেন আটকানো হচ্ছে। তাদের কোনো উত্তর নেই।”
স্পর্শিয়া বলেন, আমরা নিজেরাই থানায় গিয়েছি। প্রাঙ্গণ গেছে, আমি জিদ করে গেছি। আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়নি। আমি জিদ করে গেছি কারণ আমি দেখব কেন তারা আমাদের সঙ্গে এমন করছে। আমাদের থানায় ধরে নিয়ে গেছে এটা টোটালি রং থিং।
“থানায় যাওয়ার পর এসিকে জিজ্ঞাসা করেছি, আমরা কী করেছি? উনি বলেছেন, আপনি তো গাড়ি চালাচ্ছিলেন না। আপনি আমাদের কোনো ইস্যু না। আপনি চলে যেতে পারেন। আমি বলেছিলাম, আমার বন্ধুকে রেখে আমি যাব না। এসি ভদ্রলোক খুব ভালো মানুষ। পরে মুচলেকা নিয়েছে। ওটা করে আমরা বাসায় চলে আসছি।”
-
অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে কী কথা হল, জানালেন অনন্ত জলিল
-
কানের লাল গালিচায় সুলতান সুলেমানের ‘হুররাম’
-
ঢাকায় আসছেন শিল্পা শেঠি
-
আন্তর্জাতিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কাজ করছেন নুহাশ হুমায়ূন
-
মেদ ঝরাতে অস্ত্রোপচারে গিয়ে মৃত্যু হল অভিনেত্রীর
-
বিরাট কোহলির কাছে ব্যাটিং শিখছেন আনুশকা
-
দুই সিনেমা নিয়ে কানের মার্শে দ্যু ফিল্মে গেলেন অনন্ত-বর্ষা
-
এক মঞ্চে আসছে ৮ রক ব্যান্ড
সর্বাধিক পঠিত
- শেষ বেলার ২ উইকেটে এগিয়ে বাংলাদেশ
- ফেনীতে গাড়ি তল্লাশি নিয়ে র্যাব-পুলিশের ‘হাতাহাতি’, আহত ৪
- বিদায়ের ইঙ্গিত দিলেন স্ত্রী, মুশফিক বললেন ‘এমন ভাবনা নেই’
- ‘বাংলাদেশে আসলে অভিজ্ঞতার দাম নেই’
- ‘মাদ্রিদে আসছেন এমবাপে’ ঘোষণার অপেক্ষায় রিয়াল
- লিভারপুলের জয়ে শিরোপা লড়াই গড়াল শেষ রাউন্ডে
- নয় সচিব পদে রদবদল, পদোন্নতি
- আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকারের ভাবনায় রাইস ব্র্যান ও সরিষার তেল
- ‘সালিশে ক্ষুব্ধ’: চেয়ারম্যানের ছেলেকে ‘হত্যার পর আত্মহত্যা’
- মেদ ঝরাতে অস্ত্রোপচারে গিয়ে মৃত্যু হল অভিনেত্রীর