১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী।
রুনা লায়লা শিল্পী জীবনের জন্য সব থেকে বড় অবদান তার মায়ের। তার মা চাইতেন খুব ভালো শিল্পী হবেন। এই জন্য তিনি খুবই পরিশ্রম করেছেন। রুনা লায়লা চার বছর নাচও শিখেছেন।
ওস্তাদ হাবিব উদ্দিন আহমেদ ও ওস্তাদ আবদুল কাদের পিয়ারুর কাছে ক্লাসিক্যাল শিখেছেন। বিখ্যাত গজল শিল্পী মেহেদী হাসানের ভাই ওস্তাদ গোলাম কাদেরের কাছে শিখেছেন গজল। কিশোরী বয়সেই তিনি প্লেব্যাক গাওয়া শুরু করেন।
বড় বড় উর্দু গানের কিংবদন্তীদের সঙ্গে গান গাইতেন। 'জুগনু' ছবি দিয়ে ১৯৬৫ সালে তার প্লেব্যাক ক্যারিয়ার শুরু হয়। আর বাংলা ছবিতে গান গাওয়া শুরু করেন, সুবল দাসের সুরে 'স্বরলিপি' ছবিতে।
পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রায় এক হাজার গান রেকর্ড করেছেন তিনি।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে আসেন তিনি। সেই সময়ই ভারতে বড় তিনটি কনসার্টে গান পরিবেশন করে ভারতের দর্শকদের কাছেও তিনি সমাদৃত হয়। বিশেষ করে ‘দমাদম মাস্ত কলন্দার’ গানটির জন্য ভারতে আলাদা পরিচিতি পান তিনি।
ভারতের দুই কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী লতা মুঙ্গেশকর ও আশা ভোঁশলের সঙ্গে সখ্য রয়েছে তার।
বাংলা-হিন্দি-উর্দু ছাড়াও গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, বেলুচ, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ফরাসি ও ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
মুম্বাইয়ের একটি প্রতিষ্ঠান পাকিস্তানি সংগীত পরিচালক-সুরকার নিসার বাজমিরের প্রতিদিন ১০টি করে তিনদিনে ৩০টি গান রেকর্ড করেন, যা পৃথিবীর একদিনে রেকর্ড করা সবচেয়ে বেশি গানের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠায়।
শুধু গানই নয়, চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শিল্পী’ নামক চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন রুনা লায়লা।
ক্যারিয়ার জুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ছয় বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এছাড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।