জলবায়ু সম্মেলনে যাচ্ছে ‘নোনাজলের কাব্য’, দেশে মুক্তি ২৬ নভেম্বর

জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন ঘুরে এসে তরুণ নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’ দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ২৬ নভেম্বর।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2021, 11:13 AM
Updated : 23 Oct 2021, 11:13 AM

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিনেমার পরিচালক সুমিত।

এর আগে লন্ডন, বুসান, গুটেনবার্গ, সাও পাওলো, তুরিন, সিয়াটেল, সিঙ্গাপুরসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে সিনেমাটি।

বাংলাদেশে মুক্তির আগে ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে আইম্যাক্স থিয়েটারে সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে বলে জানান এ তরুণ নির্মাতা।

এ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়াও একই শহরে ২৯ নভেম্বর জাতিসংঘের কনফারেন্স অব ইয়্যুথেও সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে।

দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী প্রান্তিক জেলেদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, আবহাওয়ার প্রতিকূলতার মুখে টিকে থাকার লড়াই এবং তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও সংস্কার এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়।

পরিচালক সুমিত বলেন, “ছবিটি নির্মাণ করতে আজ থেকে তিন বছর আগে আমি গিয়েছিলাম পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক জেলেপাড়ায়। খুবই দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, উপকূলবর্তী সেই গ্রামটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। মহামারীর কারণে প্রায় দেড় বছর আমার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠে নি, কিন্তু এবার যখন পরিচিত সেই জায়গার খোঁজে, প্রিয় সেই মানুষগুলোর খোঁজে গেলাম, গিয়ে দেখি সেখানে কেবলমাত্র কিছু গাছপালা ভেঙে পরে রয়েছে, জোয়ারের পানি উঠবে উঠবে ভাব।

জানতে পারলাম এই অঞ্চলে গত ২-৩ বছর যাবৎ সমুদ্রের পানির উচ্চতা খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। জোয়ারের তীব্রতা তো রয়েছেই। গতবছর ঘূর্ণিঝড় আম্পনেও অনেক ক্ষতি করেছে। এ সকল প্রতিকূলতা গভীর সমুদ্রে বাণিজ্যিকভাবে ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে তেমন একটা নেতিবাচক প্রভাব না। ফেললেও হারিয়ে যাচ্ছে অনাদিকাল থেকে চলে আসা এসকল প্রান্তিক জেলেদের উপার্জনের পন্থা।

জেলেরা হারিয়ে ফেলছে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার ক্ষমতা। জীবিকার তাগিদে ধীরে ধীরে তারা পাড়ি জমাতে শুরু করেছে শহরাঞ্চলে।

সুমিত বলেন, “নোনা জলের কাব্য সিনেমায় যে সব জেলে ভাই-বোনেরা অভিনয় করেছিলেন, তাদের কারও কারও সঙ্গে আমার এবার দেখা হয়েছে। তাদের মুখে শুনেছি ইলিশ মাছও নাকি এখন অপ্রতুল। শুনে বুঝলাম তাদের জীবনের এই কঠিন বাস্তবতা আমার সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে। সংগামী এ মানুষগুলোর গল্প বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা খুবই জরুরি।”

এ সিনেমায় মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, তিতাস জিয়া, এবং তাসনোভা তামান্না। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব।

ফজলুর রহমান বাবু বলেন, “আমি সিনেমায় চেয়ারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। একটি চমৎকার আবহে কাজটি করার সুযোগ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি সততা আর নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে একটি সিনেমা মানসম্মত হয়। আমি আশাবাদী নোনাজলের কাব্য সিনেমাটি আমাদের চলচ্চিত্র জগতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।”

২০১৬ সালে সিনেমাটির চিত্রনাট্য ভারতের ফিল্ম বাজারের কো-প্রোডিউসার বাজারে নির্বাচিত হয়েছিল। ২০১৮ সালে চিত্রনাট্যের জন্য সিনেমাটি পেয়েছিল ‘স্পাইক লি রাইটিং গ্রান্ট।’