কেবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন বাস্তবায়নে সরকার কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিজ্ঞাপন দেখায় এমন টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করতে গিয়ে বিজ্ঞাপন ছাড়া (ক্লিন ফিড) চলে এমন চ্যানেলও বন্ধ রেখেছিলেন পরিবেশক ও কেবল অপারেটররা।
পরে বিজ্ঞাপন ছাড়া চলে এমন ২৪টি চ্যানেলের তালিকা পাঠিয়ে পরিবেশক ও কেবল অপারেটরদের তা সম্প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে সরকার; পরিবেশকরা বলছেন, তারা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে সেগুলো চালু করে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ক্লিন ফিড পাঠানো বিদেশি চ্যানেল কেবল অপারেটররা সম্প্রচার না করলে বুধবার থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবে সরকার।
“আমরা চাই, আইনের যেন কোনো ব্যত্যয় না ঘটে। আইন অনুযায়ী ব্যবসাটি পরিচালনা করব।”
মঙ্গলবার বিকালে বনানীতে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স- অ্যাটকোর সভাপতি অঞ্জন চৌধুরীসহ অন্যান্যের সঙ্গে কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নেতা এস এম আনোয়ার পারভেজসহ অন্যান্যের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে তারা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের তালিকা পাওয়ার পর ‘ক্লিন ফিডে’ চলে এমন ২৪টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার চালু হওয়ার পর স্টার স্পোর্টস, মাস্তি টিভিসহ অন্তত চারটির মতো বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনসহ প্রচার হওয়ার কথা তুলে এনেছেন সাংবাদিকরা।
বিষয়টি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার পারভেজ বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী। তথ্য মন্ত্রণালয় আমাদের যে দিক নির্দেশনা প্রদান করবে, সেই নির্দেশনা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করব। কালকে আমাদের একটা লিস্ট দিয়েছে। সেই লিস্ট অনুযায়ী রাতেই চ্যানেলগুলো আপ করে দিয়েছি। যদি এর মধ্যে বিজ্ঞাপন থেকে থাকে এটার দায়ভার অন্তত আমার না। যেহেতু মন্ত্রণালয় আমাদের পারমিশন দিয়েছেন।
“এই ভাবে আরও কিছু চ্যানেলে যদি কোনো লিস্ট দেয় অবশ্যই আমরা সঞ্চালন করব। কথায় আছে, বিজ্ঞাপনমুক্ত চ্যানেল হতে হবে। এখন কম থাকুক বিজ্ঞাপন বেশি থাকুক-একটা থাকলেও বিজ্ঞাপন। এখন মন্ত্রণালয় যদি মনে করে স্বল্প পরিমাণে বিজ্ঞাপন দিয়ে চলতে পারে সেটার অবশ্যেই বিবেচনা করেই আমাদের হয়তো পরিচালনার অনুমতি দিয়েছেন।”
বৈঠক শেষে অ্যাটকো ও কোয়াবের নেতারা বলছেন, তাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে; আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দুই পক্ষের আরও প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশদ আলোচনার জন্য বৈঠকে বসছেন।
“টেলিভিশনে যে সকল বিজ্ঞাপন তৈরি হয়, তাদেরও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রয়েছে। তার কোনোটিই সম্ভব হচ্ছিল না, ক্লিন ফিড না থাকায়। যেটা এখন হবে। অনেক দেশ থেকেই তারা প্রোগ্রাম চালাচ্ছে। তারা অ্যাডগুলো দেখাচ্ছে। আমরা কিন্তু কোনো দেশেই পারছি না। আমাদের একটা দাবি ছিল, সরকারেরও ইচ্ছা ছিল। সেই ইচ্ছাটাই পূরণ করা হয়েছে ১ অক্টোবর। এটা না যে সরকার হুট করে বলেছে এক তারিখ থেকে বাস্তবায়ন করা হবে।
“এই জিনিসগুলো চিন্তা করলে আমরা এখানে উইন-উইন সিচুয়েশন ছাড়া আর কিছু দেখি না। শুধু মাথার উপর থেকে বেরিয়ারটা সরাতে হবে। দেশের ভালোর জন্যই সরকার সেটা করেছে। কেবল অপারেটর ভাইয়েরাও সেটাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এখন মেকানিজম কীভাবে হবে সেটা অন্য কথা। ডিস্ট্রিবিউটর না দিলে দিতে পারবে না। সেটাও উনারা ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারেন।”
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটকোর সাবেক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পরিবেশক প্রতিষ্ঠান ওয়ান অ্যালাইন্সের এমডি সাইফুল হোসেন সোহেলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: