লকডাউনে রাস্তায় নাটকের শুটিং, থানায় মুচলেকা দিয়ে রেহাই

কঠোর লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে রাস্তায় শুটিং করায় পরিচালক নাসিরউদ্দিন মাসুদের একটি টিভি নাটকের শুটিং ইউনিটের ডজনখানেক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়ার পর মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছে খিলগাঁও থানা পুলিশ।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2021, 07:46 AM
Updated : 6 July 2021, 09:00 AM

খিলগাঁও থানার ওসি ফারুকুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খিলগাঁওয়ের সি ব্লকে শুটিংয়ের সময় ভিড় হওয়ায় পরিচালকসহ ইউনিটের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়।

“শুটিংয়ের আশেপাশে অনেক লোকজন হয়েছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। অনুমতির কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেননি। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।”

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের থানায় নেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে পরিচালক নাসিরউদ্দিন মাসুদসহ নাটকের চিত্রগ্রাহক ও কলাকুশলীরা ছিলেন। তাদের ছাড়িয়ে আনতে সোমবার সন্ধ্যায় খিলগাঁও থানায় গিয়েছিলেন অভিনেতা-নির্মাতা হাসান জাহাঙ্গীর।
 
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, নাসির উদ্দিন মাসুদের ওই নাটকের শুটিয়ে ১২ জনের মত কলাকুশলী ছিলেন। ঘটনা জানতে পেলে তিনি সন্ধ্যায় থানায় যান। স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতায় মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।

পুলিশ কাগজপত্র না পাওয়ার কথা বললেও পরিচালক নাসিরউদ্দিন মাসুদ দাবি করেছেন, শুটিংয়ের অনুমতি তাদের ছিল।

মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের পারমিশন নেওয়া ছিল। থানায় গিয়ে কথাও বলা ছিল। কিন্তু সেটা ডিসি সাহেবের নজরে ছিল না। সে কারণে থানায় গিয়ে লিখিত দিয়ে চলে এসেছি।”

নাটকের নাম জানতে চাইলে তা বলতে রাজি হননি নাসিরউদ্দিন মাসুদ।

বিষয়টি নিয়ে ছোট পর্দার ১৪ সংগঠনের মোর্চা এফটিপিও এক বিবৃতিতে রাস্তা-ঘাটে শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়ে নির্মাতা-কলাকুশলীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে; তা না হলে শুটিং বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং হাউজের ভেতরে, টেলিভিশনের ছাড়পত্র নিয়ে টিভি নাটকের শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে। তবে তবে কেউ কেউ বিধি ভেঙে লকডাউনের মধ্যে রাস্তা-ঘাটেও শুটিং করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তাদের সতর্ক করে এফটিপিও বলছে, “যারা কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে উন্মুক্ত স্থানে (রাস্তা-ঘাটে) চিত্রধারণের কাজ করছেন, তাদের অবিলেম্বে তা বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা অনেকেই মানছেন না। খিলগাঁও এলাকায় রাস্তায় শুটিং করতে গিয়ে পুলিশের হাতে শুটিং ইউনিট গ্রেপ্তার (আসলে গ্রেপ্তার নয়, জিজ্ঞাসাবাদ) হয়। তাদেরকে সাংগঠনিকভাবে থানা থেকে ছাড়িয়েছি।

“এহেন কর্মকাণ্ডে সমাজ এবং রাষ্ট্রের কাছে শিল্পী-কলাকুশলীদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা কখনোই কাম্য হতে পারে না। রাস্তা-ঘাটে চিত্রধারণের কাজ যদি আপনারা বন্ধ না করেন তাহলে আমরা সকল প্রকার চিত্রধারণের কাজ বন্ধ করার ঘোষণা দিতে বাধ্য হব।”