চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ঢাকা বোট ক্লাবে নির্যাতনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে গণমাধ্যমের সামনে এলেন তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি; পরীমনির সঙ্গে তিনিও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
Published : 15 Jun 2021, 01:26 PM
সোমবার সকালে সাভার থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে পরীমনির মামলা দায়েরের পর বিকালে উত্তরা থেকে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার রাত ৮টায় ঢাকার গুলশানে পরীমনির বাড়িতে সাংবাদিকদের সামনে আসেন জিমি; তিনি প্রায় ৬ বছর ধরে পরীমনির সঙ্গে কাজ করছেন।
জিমি অভিযোগ করেছেন, পরীমনিকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়েছে। তার মোবাইল ছুড়ে ফেলা হয়েছে।
পরীমনি তার মামলার এজাহারে বলেছেন, অমি ‘পরিকল্পিতভাবে’ ৮ জুন রাতে তাকে বোট ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে নাসির মাহমুদ তাকে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ করেন। বাধা দিতে গিয়ে ‘মারধরের’ শিকার হন জিমি।
এই কস্টিউম ডিজাইনার অভিযোগ করেন, নাসির উদ্দিন মাহমুদ গালাগালি করতে থাকলে তিনি যখন ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে মোবাইলের ক্যামেরা চালু করেন, তখন নাসির তাকেও গালাগাল করেন।
“ততক্ষণে আমার মোবাইলে ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রেকর্ড হয়েছিল। তখন উনি (নাসির) ফোনটা হাতে নিয়ে আমাদের দুজনকেই আক্রমণ করেছেন। এর মধ্যে আপির (পরীমনি) ফোনটা তার কাছে রেখে চলে আসি। ওরা ভেবেছে যে, ওই ফোনেই ভিডিওটা করেছি। ফোনটা উড়ায়ে ফেলে দিয়েছে।”
পরে এক ওয়েটারের সহায়তায় ফোনটি উদ্ধার করতে পেরেছিলেন বলে জানান জিমি।
“ওরা লাইট বন্ধ করে দিয়েছিল। আপির অক্সিজেন লেভেল কমে আসছে; এসিও বন্ধ। ওয়েটারদের বলছিলাম, নিঃশ্বাস নিতে পারতেছে না, এসিটা ছাড়েন না। তখন ওয়েটার একজন এসি ছেড়েছিল।
“তিনি নিঃশ্বাস নিতেই পারছিলেন না, খুবই খারাপ অবস্থা। হাসপাতালে নিতে হবে; অক্সিজেন লাগবে। আমি ধরে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আসি।”
এরপর ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ জানাতে জিমিকে সঙ্গে নিয়ে সেদিন রাতেই বনানী থানায় গিয়ে কোনো সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করে আসছেন পরীমনি।
চার দিনে যারা ঘটনাটি জেনেছেন, তাদের অনেকে উল্টো ‘দমিয়ে রাখার’ চেষ্টা করেন বলেও পরীমনির ভাষ্য; আসামিদের সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগাযোগের অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি।
মামলা হওয়ার পর প্রধান দুই আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় এখন ‘কথা বলার মত সাহস’ পাচ্ছেন বলে জানালেন জিমি।
“আমরা অনেক সময় অনেক কথা বলতে পারি না; সাহস থাকে না। কিন্তু এখন কথাগুলো বলার সময় হয়েছে। একটা মানুষ অপরাধ করেছে, সবার সামনে এসেছে। এখন সবকিছুই বের হবে।”