সোমবার সকালে সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর বিকালে উত্তরা থেকে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পরীমনি তার মামলার এজাহারে বলেছেন, দুই নম্বর আসামি অমি ‘পরিকল্পিতভাবে’ ৮ জুন রাতে তাকে বোট ক্লাবে নিয়ে যায়। সেখানে প্রধান আসামি নাসির মাহমুদ তাকে ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ করেন। বাধা দিতে গিয়ে ‘মারধরের’ শিকার হন পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার জিমি।
নাসির গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোমবার রাতে ঢাকার বনানীতে নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এসে পরীমনি বলেন, নাসির মাহমুদের সঙ্গে তার আগে পরিচয় ছিল না। আসামিদের মধ্যে কেবল অমিই তার পূর্ব পরিচিত। তার উপর ‘বিশ্বাস’ রেখেই সেদিন তুরাগ নদীর তীরে সেই বোট ক্লাবে গিয়েছিলেন তিনি।
পরীমনি বলেন, “জিমির কলেজ জীবনের বন্ধু অমি। সে হিসেবে আমার সঙ্গে দুই বছর ধরে ‘হ্যাই হ্যালো’। তবে ওই রকম ক্লোজড না আমরা।”
পরীমনি জানান, সিঙ্গাপুর ট্রেইনিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন অমি; এর বাইরে খুব বেশি কিছু জানা নেই তার।
পরীমনির পোশাক ডিজাইনার জিমি সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর আশাকোনা এলাকায় অমিদের বাসা। সিঙ্গাপুর ট্রেইনিং সেন্টার ছাড়াও আরও কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে অমির।
মামলার প্রধান আসামি ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (বিনোদন ও সংস্কৃতি) নাসির মাহমুদের সঙ্গে অমির আগে থেকেই পরিচয় ছিল বলে জানান পরীমনি।
পরীমনিকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর নাসির মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি ও শাহ এস আলমকে বহিষ্কার করেছে বোট কর্তৃপক্ষ।
বোট ক্লাবে যাওয়ার পর অমির ভিন্ন চেহারা দেখে বিস্মিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন পরীমনি।
“আমি ভিক্টিম। আমি যেখানে ইচ্ছা করলেও বের হতে পারিনি। আমি অমিকে বিশ্বাস করেই সেখানে গিয়েছিলাম। ওখানে বসেছিলাম বিশ্বাস করে। কফি খেতে ২৫ মিনিট লেট হচ্ছিল। আমরা যখন উঠে আসতে চাচ্ছিলাম, অমিই তখন বাধাটা দিচ্ছিল।”
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ও অমির সঙ্গে দুটো গাড়িতে করে উত্তরার দিকে যান পরীমনি। তার ছোটবোনও সে সসময় সঙ্গে ছিলেন।
পথে অমির কথায় বোট ক্লাবের সামনে থামেন তারা। অমি তাদের ভেতরে ঢোকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পরে নাসির মাহমুদ কফি পানের আমন্ত্রণ জানান বলে মামলায় বলা হয়।
পরীমনি বলেন, “এরপর অমি মদ পানের জন্য জোরাজুরি করে। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১ নং আসামি (নাসির) জোর করে আমার মুখের মধ্যে বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে।”
নাসির মাহমুদ তখন ‘অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ’ করতে থাকেন এবং ‘ধর্ষণের চেষ্টা’ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন পরীমনি।
তবে নাসির মাহমুদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সাংবাদিকদের বলেন, বোট ক্লাবে সেদিন পরীমনি জোর করে দামি মদ নিতে গেলে বাধা দিয়েছিলেন তিনি, তাতে এই অভিনেত্রী উত্তেজিত হয়ে তাকেও আক্রমণ করেছিলেন। পরে নিরাপত্তা রক্ষীরা এসে তাকে বের করে দেয়।