“এটা কি কোরিয়ান অভিনেত্রীর প্রতি মার্কিন আতিথেয়তা? ‘না হলে কীভাবে আমি গ্লেন ক্লোউসকে টপকে জয়ী হলাম!”
অস্কার নিতে মঞ্চে উঠে এভাবেই মজার ছলে কথা বলেছেন ইয়ুন।
সেরা পার্শ্বচরিত্র বিভাগের নাম ঘোষণার দায়িত্বে ছিলেন মার্কিন অভিনেতা ব্র্যাড পিট। তার ‘প্ল্যান বি’ প্রতিষ্ঠানের প্রযোজনায় নির্মিত ‘মিনারি’ ছবিতে ‘মাতামহী’র চরিত্রে অভিনয় করেই ইয়ুনের হাতে অস্কার উঠলো।
তবে পুরস্কার জয়ের চাইতেও তিনি যেন বেশি আনন্দিত ব্র্যাড পিটের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে।
তাই তো ধন্যবাদ ভাষণ দিতে মঞ্চে উঠেই আনন্দিত কণ্ঠে ইয়ুন বলেন, “জনাব ব্র্যাড পিট, অবশেষে... আপনার সাক্ষাত পেয়ে ভালো লাগলো। আমরা যখন কাজ করছিলাম তখন আপনি কই ছিলেন!”
শুধু তাই নয়, নিজের নাম নিয়ে রসিকতা করতে ছাড়েননি তিনি।
“কোরিয়ান হিসেবে আমার নাম ইয়া জাং ইয়ুন। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ বল ইয়া ইয়া ইয়ুন, কেউ বল ইয়ু জাং। তবে আজ রাতে তোমাদের সবাইকে ক্ষমা করা হল।” বলেই হেসে দেন তিনি।
প্রতিযোগিতা একদমই পছন্দ নয় ৭৩ বছর বয়সি এই অভিনেত্রীর। তাই তো তিনি পার্শ্বচরিত্র বিভাগে মনোনয়ন পাওয়া সবার নাম উল্লেখ করে বলেন,
“প্রতিযোগিতায় আমার বিশ্বাস নেই, কীভাবে আমি গ্লেন ক্লোউসকে টপকে জয়ী হলাম? আমি তার অনেক কাজ দেখেছি।”
“তাই এটা হল শুধুই মনোনয়, পাঁচটি মনোনয়ন, যেখানে আমরা বিভিন্ন ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই আমরা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারি না।”
তিনি মজা করে আরও বলেন, “হতে পারে আপনার চাইতে আমি ভাগ্যবতী।”
তারপর একটু চুপ করে থেকে আবার বলে ওঠেন, “অথবা হতে পারে এটা কোরিয়ান অভিনেত্রীর জন্য আমেরিকান আতিথেয়তা। ঠিক জানি না, তারপরও অনেক ধন্যবাদ।”
এর আগে ১৯৫৮ সালে ‘সায়োনারা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথম এশীয় হিসেবে সেরা পার্শ্বচরিত্রের অস্কার জয় করেছিলেন জাপানি-মার্কিন অভিনেত্রী মিয়োশি উমেকি।
পঞ্চাশ বছর আগে ‘উইম্যান অফ ফায়ার’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু করা বহুমুখী প্রতিভাধর ইয়ুন, নিজের অস্কারটি কোরিয়ান পরিচালক কিম কি ইয়ং’কে উৎসর্গ করে বলেন, “তিনি বেঁচে থাকলে অবশ্যই খুশি হতেন।”
দীর্ঘ এই পথ চলায় তার কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন অনেকে। এরমধ্যে রয়েছেন গত বছর সেরা ছবি ও পরিচালক-সহ চারটি বিভাগে অস্কার জয় করা কোরিয়ান সিনেমা ‘প্যারাসাইট’এর পরিচালক বং জুন হো।
দীর্ঘ অভিনয় জীবন কাটিয়ে তার এই প্রাপ্তির বিষয়ে যখন অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের মঞ্চের পেছনে সাংবাদিক সম্মেলনে অনুভূতি জানতে চাওয়া হয় তখন তিনি বলেন, “জাতি বা লিঙ্গ বৈষম্য নয়, বরং একে অপরকে গ্রহণ করা আর বোঝার এটাই সময়।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের সব রং একত্রিত করলে আরও সুন্দর হবে। এমনকি রংধনুর রংও সাতটি। এটাই সুযোগ একসঙ্গে গল্প ভাগ করে নেওয়ার।”
রয়টার্স, সিএনএন এবং ভ্যারাইটি ডটকম অবলম্বনে।